example.com
Verify you are human by completing the action below.
তাহলে কিভাবে আমরা এটাকে সমাজ বলতে পারি? প্রকাশ্যে মানুষ খুন হচ্ছে, খুন করছে, দাঁড়িয়ে দেখছে! কিভাবে সম্ভব?
মানুষকে সামাজিক জীব বলা হয়। কারণ সৃষ্টিগতভাবে মানুষ পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টি থেকে ব্যতিক্রম এবং অসাধারণ। তার মধ্যে বিশেষ কিছু গুণ রয়েছে, যেগুলোর জন্য সে অন্য প্রাণী থেকে আলাদা। তার প্রধান গুণ, মানুষ সামাজিক। প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কী সমাজ? যেখানে আইনের বিচার, সুশাসন, মানুষের অধিকার, মৌলিক চাহিদার প্রেক্ষাপটে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, সৃষ্টিগত চিন্তা সর্বোপরি জীবনের বাস্তবতায় চরম সত্য- মৃত্যুর স্মরণ নেই বললেই চলে।
তাহলে কিভাবে আমরা এটাকে সমাজ বলতে পারি? প্রকাশ্যে মানুষ খুন হচ্ছে, খুন করছে, দাঁড়িয়ে দেখছে! কিভাবে সম্ভব? যে খুন হচ্ছে সে হয়তো জানে না তাকে কেন খুন করা হচ্ছে বা সে যে অপরাধে খুন হচ্ছে তা কি আসলেই খুন হওয়ার যোগ্য অপরাধ? যে খুন করছে সে কি পড়ে থাকা কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরা ব্যক্তিটার দিকে তাকিয়ে নিজের মৃত্যুর কথা কখনো চিন্তা করতে পেরেছিল এবং যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে তার কি কোন প্রকার দায়বদ্ধতা নেই?
সমাজে প্রচলিত কথা- কাকের গোশত কাক খায় না, কথাটা মোটামুটি সত্য। অথচ একজন মানুষ পৈচাশিক আনন্দ নিয়ে একজন মানুষকে খুন করে। একজন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে। আরেকজন হাজারো মানুষের সম্মুখে কাতরাতে কাতরাতে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যু বরণ করে। এ দৃশ্য মানুষ হিসেবে দেখা বা ঘটা কিভাবে সম্ভব? তাহলে যারা ঘটনায় ছিল তারা হয়তোবা মানুষ নয় বরং তার চেয়ে নিকৃষ্ট। আর মানুষ না হলে সমাজ কাদের? অথচ উপস্থিত সকলে যদি প্রত্যেকে নিজের জীবনের গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে একটু চিন্তায় মগ্ন হতে পারত তাহলে ঘটনার আগেই তারা কম্পিত হতেন।
আসলে মানুষের জীবনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কী? টাকা, নারী, গাড়ি, বাড়ি, ক্ষমতা, প্রশংসা প্রিয়তা, বড়ত্ব। কিন্তু এর কোনটা মানুষের জন্য চিরস্থায়ী সমাধান? আজ থেকে চার হাজার বছর আগে মানুষ হয়তো ১০০, ২০০ বছর বেঁচে থেকে মৃত্যুবরণ করেছে। আজকে হয়তো বা যে আছে সে ৫০ থেকে ১০০ বছর পরে শক্তি শুন্য হয়ে পৃথিবী থেকে চলে যাবে। তবে এই ক্ষণস্থায়ী শক্তি অর্জনের জন্য কেন অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
পৃথিবীর উন্নয়ন হয়েছে গঠনমূলক চিন্তার দ্বারা। ঠিক তেমনি একজন মানুষের উন্নয়ন হবে তার গঠনমূলক মানসিকতার প্রেক্ষাপটে। মানুষের থেকে শটকে পড়া, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং কর্মদোষে আবার কষ্টে বা শাস্তির মুখে পড়া- এতে কী লাভ বা কার ক্ষতি?
যে মানুষ তার নিজের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে মানুষ হওয়ার স্বপ্নে চিন্তা, চেষ্টা বা তার কার্যক্ষমতাকে কাজে লাগায়, পৃথিবী তাকে ভালোবাসে। মা মাটি দেশ তাকে ভালোবাসে। সে তার ক্ষণস্থায়ী জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রকৃত শান্তিতে শয়ন করতে পারে। তাই আমাদের সকলের প্রকৃত শান্তির জন্য জ্ঞান অন্বেষণের পাশাপাশি জীবনে শান্তির প্রেক্ষাপটে নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সরকার জুম্মান
লেখক সাংবাদিক
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম, শীর্ষ তিন