example.com

Verify you are human by completing the action below.

example.com needs to review the security of your connection before proceeding.
অর্থই কি সব সু‌খের মূল? – দেশ দর্শন
সোমবার রাত ৩:০১, ৪ঠা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ২০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
হাফেজ আবুল হাসান কুমিল্লার হুজুরের জানাযায় জনতার ঢল ‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

অর্থই কি সব সু‌খের মূল?

২২০৫ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ইদানিং মানুষের সুখানুভুতিগুলো অর্থ ও স্বার্থনির্ভর হয়ে পড়েছে। সকল সুখ, সকল চাওয়া-পাওয়া যেন অর্থের ও স্বার্থের আবরণে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। অর্থ উপার্জন এখন প্রয়োজন ছাপিয়ে চিন্তা শক্তিকে গ্রাস করেছে, মনের ক্ষুধায় পরিণত হয়েছে। আত্মা ও আত্মীয়তার বন্ধনগুলো আত্মার মানদণ্ডে বিবেচিত না হয়ে অর্থ-সম্পদের তুলাদণ্ডে মাপা হচ্ছে।

নির্ভরশীলতা ও আস্থার পবিত্র বন্ধনগুলোকে পাশ কাটিয়ে অর্থ-বৈভব মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে। টাকা হলে ক্ষমতা, সুখ, সমৃদ্ধি ও উন্নতির দ্বার খুলবে, না হলে খুল‌বে না- এই ধারাণাটুকু যেন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে রেখেছে। বর্তমান সমাজের অধিকাংশ মানুষ মনে করে, অর্থই শক্তি, অর্থেই মুক্তি। ফলে অর্থ উপার্জনের জন্য বৈধ অবৈধ হালাল হারামের তোয়াক্কা না করে, অর্থের পিছনে অবিরাম ছুটে চলছে। আমাদের কাছে না আছে নৈতিক মূল্যবোধ, না আছে সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে, আচার-আচরণ ও সাধুতা-ভদ্রতা শিক্ষা দান, মানুষ হিসাবে তার দায়িত্ব-কর্তব্য, সামাজিক শিষ্ঠাচার শিক্ষা দিয়ে তাদের ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পারিবারিক দায়িত্ববোধ, আর না আছে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। শয়নে স্বপনে কেবল টাকা আর টাকা। ফলে অর্থ উপার্জনে ব্যর্থ হলে বা কাঙ্ক্ষিত অর্থ উপার্জন করতে না পারলে, অল্পতেই হতাশ হয়ে নিজের সক্ষমতাকে তুচ্ছজ্ঞান করতে শুরু করি এবং নিজেকে ব্যর্থ মনে করে মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলি।

আমরা আমাদের সন্তানদের উপরও প্রতিনিয়ত চাপ প্রয়োগ করছি, অধিক অর্থ উপার্জনের রাস্তা ঠিক করে দিচ্ছি। স্বপ্ন দেখাচ্ছি এবং উৎসাহিত করছি অর্থনির্ভর চিন্তা, অর্থনির্ভর শক্তি অর্জনের।তাদেরকে শিখাই না জীবন ফুলশয্যা নয় এবং জীবনের চড়াই উৎরাই, দুঃখ কষ্টসহ্য করতে হয়, খারাপ সময়ে হতাশায় ভেঙ্গে না পড়ে নিরবে নিভৃতে আল্লাহর কুদরতি কদমে সিজদায় লুটিয়ে পরে দুফোঁটা চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে হয়। আমরা আমাদের সন্তানদেরকে একথা শেখাতে ব্যর্থ হয়েছি যে, কেবল বাহ্যিক উপকরণ দিয়েই এই পৃথিবী নিয়ন্ত্রিত নয় বরং পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ অদৃশ্য সত্তা এক আল্লাহর হাতে। তাদেরকে যদি এ শিক্ষা দিতে না পারি, তাহলে আমিও অন্যদের মত, আমার হতাশাগ্রস্থ সন্তানের চিরকুট দেখতে পাবো যে, বাবা-মা, আমি তোমাদের অনেক ভালোবাসি। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি তোমাদের জন্য কিছু করতে পারিনি, আমাকে ক্ষমা করে দিও।

বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। বছরে প্রায় ১১ হাজার লোক আত্মহত্যা করে।বহির্বিশ্বে এ চিত্র আরো ভয়াবহ। এ আত্মহত্যার সিংহ ভাগ হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত অর্থ উপার্জন করতে না পারা, বর্তমান জীবনযাত্রার মান নিয়ে অসন্তু‌ষ্টি এবং স্বপ্নময় জীবনটি যাপন করতে না পারার আক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে কী খাব, কী পরব বা আগামি প্রজন্মের জন্য কী রেখে যাব এই চিন্তা থেকে সৃষ্ট হতাশা।

প্রকৃতপক্ষে অর্থবিত্ত, টাকাপয়সা, ধনদৌলত হলো ইবলিস শয়তানের একটি ফাঁদ। শয়তান মানুষকে দরিদ্র হওয়ার ভয় দেখায়, ভবিষ্যৎ অর্থকষ্টকে বারবার স্মরণ করায় এবং সমৃদ্ধ জীবনের আশায় অহর্নিশ দৌড়-ঝাঁপ করায়। আসলে টাকাপয়সা হলো একটি আপেক্ষিক বিষয়। যে যতটুকু দিয়ে মানিয়ে নিতে পারে। আমার দেখা অনেকেই অতি সামান্য উপকরণ দিয়ে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। আবার অনেকে অর্থের প্রাচুর্যে ডুবে থাকার পরও জীবনের চাওয়া-পাওয়ার ও চাহিদার নিচে চাপা পড়ে হাসফাঁস করেছে। প্রয়োজন যখন সামনে আসে আর পকেট যদি ফাঁকা থাকে, অর্থের পেছনে অবিরাম ছুটে চলা আমাদের একরকম বদ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

আমাদের বিশ্বাস থাকতে হবে- মানব জীবনের সকল প্রয়োজন অর্থের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের প্রয়োজন পূরণ করে মানুষের স্রষ্টা। দুনিয়াতে কার কতটুকু প্রয়োজন পুরণ হবে এটা আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন। যাকে আল-কোরআনের ভাষায় রিজিক বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ ব‌লেন, যমীনে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই। তিনি জানেন তাদের থাকার জায়গা কোথায় আর কোথায় তাদেরকে (মৃত্যুর পর) রাখা হয়। সব কিছুই সুস্পষ্ট লিপিকায় বর্ণিত রয়েছে। (সূরা হূদ ৬)। অর্থের পিছনে যারা পড়েছে, অর্থ তাদেরকে জীবনের ক্ষণে ক্ষণে হতাশ করেছে। হাস্যোজ্জ্বল চেহারাগুলো মূহুর্তেই মলিন করে দিয়েছে। বাড়িয়েছে হতাশা, দুশ্চিন্তা, জীবনে ব্যর্থ হওয়ার কল্পিত চিত্র অন্তরে বদ্যমূল করে দুঃখ কষ্টের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।

হতাশা মানুষের অন্তরাত্মাকে একমুখী করে রাখে। আল্লাহ মানুষকে হতাশ হতে নিষেধ করেছেন। হতাশার থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে তার দ্বারগুলো বন্ধ করতে হবে। দুনিয়ার জীবন পরিচালনার জন্য অর্থের প্রয়োজন আছে তবে তা যেন আমাদের চিন্তা চেতনাকে গ্রাস করতে না পারে। অনেকটা নৌকা ভ্রমণের মত। পানির উপরে যাত্রা করেছি কিন্তু পানি আমাকে ডুবাতে পারেনি স্পর্শ করেনি। পি‌চ্ছিল পথ বা কণ্ঠকাকীর্ণ দূর্গম গিরি পাড়ি দেওয়ার সময় আমরা যেমন শতর্ক থাকি ঠিক তেমনি অর্থ বা ক্ষমতা আমার প্রয়োজনকে ছাপিয়ে মনোজগতকে গ্রাস না করে ফেলে সে দিকে শতর্ক থাকতে হবে। একটু অসাবধান হলে শয়তান আমাদের পেয়ে বসবে।

কারন শয়তান মানুষকে হতাশ করতে চায়। হতাশাগ্রস্থ মানুষকে ধর্মবিমুখ করা, বিষন্নতায় ডুবিয়ে দেয়া এবং মানুষকে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচ‌িত করা অতি সহজ। হতাশা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মন থেকে আল্লাহর উপর ভরসা করা।কষ্টের পর সুখ আসবেই এটা আল্লাহর ওয়াদা, আর তিনি কখনো ওয়াদার খেলাফ করেন না। এ বিশ্বাস অন্তরে সুদৃঢ় করা। আল্লাহ তায়ালাই সবকিছু ফায়সালা করেন- এ মানস‌িকতা অন্তরে লালন করা।

আল্লাহ আমাদের তৌফিকদান করুন।

কাজী আরিফুর রহমান

শিক্ষক : আল-জামিয়াতুল আরাবিয়া (মাদানী নেসাব)

খৈয়াসার, ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

পিআর পদ্ধ‌তির সু‌বিধা-অসু‌বিধা

শর‌তের কাশফুল

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি (৩য়…

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি

৪০ বছর পর শৈশ‌বের বন্ধু‌দের…