শনিবার রাত ৪:৪৪, ৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মান‌সিক অস্থিরতা দূর করতে কোন পথে হাঁটছি

১৫৮৭ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ধীরে ধীরে আমরা এক অস্থির জাতিতে পরিণত হচ্ছি। মান‌সিক দৃঢ়তা, স্থিরতা, নিশ্চলতা, অবিচলতা যেন আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে প্রায়। ঘরে-বাইরে, হাটবাজারে, অফিস-আদালতে, রাষ্ট্র-সমাজে এমনকি সংস্কৃতিতেও অস্হিরতা।

অশান্তি অগ্নিগর্ভের মতো দাউ দাউ করছে। এখনই যেন তা আগুনের গোলার মত চারদিকে ছিটকে পড়বে। অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠছি। নগণ্য কারণে কারো ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছি। রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ছি। কর্মবিমুখতা, ধর্মবিমুখতা, অলসতা, অমনোযোগিতা, আপন মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়ার প্রবণতা। জীবনের প্রতিটি স্তরে অশান্তি আর দুঃশ্চিন্তা। চারপাশে শূণ্যতা আর শূণ্যতা, যেন ধু ধু মরুভূমি।অতৃপ্তি আর অপূর্ণতার পাথরচাপা কষ্টে খেই হারিয়ে ফেলছি। অজানা এক প্রাপ্তির আশায়, মনটা বারবার হুহু করে উঠেছে। বৃদ্ধি পেয়েছে রাগ-ক্ষোভ,রূঢ়তা-কঠোরতার মাত্রা। হৃদ্যতা, সৌহার্দ্যতা ও ছাড় দেয়ার মানসিকতা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে।

ঘটছে ধৈর্যচ্যুতি। আল্পতেই যাচ্ছি রেগে। খিটখিটে মেজাজ আর অনিয়ন্ত্রিত আবেগ যেন আমাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। ফলে পারিবারিক কলহ,বিবাহ বিচ্ছেদ,পারস্পরিক অবিশ্বাস, পরকিয়া, মানীলোকের মানহানী, অযাচিত ক্ষমতা প্রদর্শন, খুন, গুম, ধর্ষণ, যবর দখল আর লুণ্ঠন এ সবই যেন নিত্যনৈমিত্তিক রুটিনে পরিণত হয়েছে। বিশ্লেষকগণ নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক মূল্যবোধ ও অস্থিরতাকে পুঁজিকরে পার্থিব ও ইহজাগতিক লাভ-ক্ষতিকেন্দ্রিক বিচার বিশ্লেষণগুলো নিয়ে পত্রিকায় কলাম লিখছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে টিভিতে টকশো করছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন ডকুমেন্টারি দেখিয়ে অস্থিরতা দূর করে, মানসিক স্বস্তি স্থাপনের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ বইপড়া, গানশুনা, অনেকটা পগলের মত হাহা করে হাসা, চোখ বন্ধ করে ডানা মেলে পাখির মত উড়া, খেলা দেখাসহ অস্থিরতা দূর করার ১০ টি, ৫টি কার্যকরী(?) পদক্ষেপের কথাও বলছেন। কিন্ত বস্তুনির্ভর ইহজাগতিক এ পদ্ধতিগুলোর কোনটিই কি আমাদের অস্থিরতা দূর করতে পারছে?

বর্তমানে একটু প্রশান্তির জন্য মানুষ ছুটছে দিকদিগন্তে। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ, খাঁ খাঁ রোদ্দুর আর তপ্ত বাতাসে দিগভ্রান্ত হয়ে পাগলের মত ছুটে চলা মুসাফির ক্লান্ত- শ্রান্ত-পরিশ্রান্ত। ধুলোয় ধূসরিত ও তৃষ্ণায় প্রাণ উষ্ঠগত হয়ে পড়লে, একটু পানির জন্য যেমন লালায়িত থাকে, এক পশলা বৃষ্টির আশায় যেমন বারবার আকাশের পানে তাকাতে থাকে। ঠিক তেমনি অস্থিরতার অনলে দগ্ধ মানুষগুলো একটি শান্তিময় জীবনের সন্ধানে দিগ্বিদিগ ছুটতে থাকে। বর্তমানে মানুষ যে পথেই শান্তি পাচ্ছে,স্বস্তি পাচ্ছে দলবেধে সেদিকেই ছুটছে,কোনরকম যাচাই বাছাই,বিচার বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে না। ফলে দিকভ্রান্ত হয়ে কেউ কেউ শান্তি খুঁজছে সর্বগ্রাসী মাদকে। নানাবিধ সমস্যা থেকে কিছু সময়ের জন্য শান্তি আর স্বস্তি পেতে মাদকাসক্ত হয়ে পরছে,ফলে ব্যক্তি কেন্দ্রিক অশান্তিটা ছড়িয়ে পরছে পুরো পরিবারে এমন কি পুরো সমাজে।

কেউ শান্তি খুঁজে অর্থের মাঝে। ফলে হালাল-হরাম, নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে অধিক মুনাফার লোভে অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে, পণ্যে ভেজাল ও ওজনে কম দিয়ে মানুষ ঠকাচ্ছে। কেউ শান্তি খুঁজছে দুর্নীতি, জবরদখল আর মানুষের অর্থ-সম্পদ গ্রাস করার মাধ্যমে। কেউ শান্তি খুঁজছে পর নারীতে আসক্ত হয়ে বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কের মাধ্যমে। বিকৃত মস্তিষ্কের কিছু লোক শান্তি খোঁজছে শোষণ, দমন-নিপীড়ন, অযাচিত শক্তি প্রদর্শন, মানুষের উপর জুলুম,ক্ষমতা প্রদর্শন ও অত্যাচারে। কেউ আবার সুদ-ঘুষ, মদ-জুয়া, ভোজন বিলাস, প্রমোদভ্রমণ, যৌনতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানির মাধ্যমে শান্তি খুঁজছেন।

ইহজাগতিকতার দেয়াল দ্বারা আমাদের অন্তরাত্মা এমন কঠিনভাবে বেষ্টিত যে, দুঃশ্চিন্তা-পেরাশানী,দুঃখ-দুর্দশা, অশান্তি-অস্থিরতাসহ জীবনে যাই ঘটুক না কেন, আমার পাপ-পঙ্কিলতা, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ভাবনা বা আখেরাত চিন্তা, সেখানে পৌঁছুতেই পারে না। আমাদের মন-মস্তিষ্ক কেবলই জাগতিক কারণ খুঁজে বেড়ায়। অস্থিরতা ও অশান্তি রোধ কেবল জাগতিক ব্যবস্থা দ্বারাই দূর করতে চাই, যা কোন দিন সম্ভব না। পাপবোধহীন জড়সভ্যতা আমাদের ধ্বংস চূড়ান্ত করছে। এর থেকে মুক্তির উপায় একটাই জড়সভ্যতা থেকে বের হয়ে পাপভীতি অন্তরে সৃষ্টি করা। এটি কেবল অন্তরে অনুধাবন করাই যথেষ্ট নয়;বরং দরকার এর সার্বজনীন চর্চা। সর্বমহলের মানুষ পাপ-পরিহারে অভ্যস্ত হতে পারলে সমাজে হতে রাষ্ট্রে হতে অস্থিরতা বিদায় করে স্বস্তি ও শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

সামাজ বা রাষ্ট্র থেকে পাপ দূর করা সম্ভব না হলেও,অন্তত ব্যাক্তি পর্যায়ে পাপবোধহীন জড়সভ্যতা থেকে বের হয়ে পাপভীতি আন্তরে প্রতিষ্ঠা করতে পারলে, আত্ম-প্রশান্তি,জান্নাতি সুখ-সমৃদ্ধি এ দুনিয়াতেই উপভোগ করা সম্ভব হবে। পাপের কারনেই মানুষের মাঝে বিপর্যয় দেখাদেয়। মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত এ পৃথিবীতে মানবজাতির অস্তিত্ব সংকটের জন্য যে সকল কাজ-কর্ম সবচে বেশি দায়ী। যে সকল জীবনাচরণের কারণে মানবজাতি বারবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে,ক্ষয়প্রাপ্ত,লয়প্রাপ্ত হয়েছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালা থেকে ভালো আর কেউ জানেন না।

তিনি এই পৃথিবীর এবং মানুষেরও সৃষ্টি কর্তা,কোন্ কাজগুলো করলে,আর কোন কাজগুলো বর্জন করলে মানুষ ও অন্যান্য মাখলুকের মাঝে ভারসাম্য রক্ষিত থাকবে এবং সুখ সমৃদ্ধি বিরাজ করবে তা তিনি ছাড়া অন্য কেউ জানেন না। সুতরাং তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই হলো মানব জাতির ইহকালিন ও পরকালিন শান্তির মূল মন্ত্র। তিনি যা আদেশ করেছেন এবং যা নিষেধ করেছেন এ সবি হলো তার বিধান।আল্লাহর বিধান না মানা হলো বান্দার জন্য পাপ। এই পাপ থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে মানব জাতির ইহকালিন এবং পরকালিন শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধি।
যদি এর ব্যাত্তয় ঘটে, তাবে তা ডেকে আনবে আমাদের জীবনে অশান্তি আর অস্থিরতা।

আল্লাহ বলেন ‘মানুষের কৃর্তকর্মের দরুণ জলে-স্থলে বিপর্যয় দেখা দেয়, যা দ্বারা আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কিছু কাজের শাস্তি ভোগ করান, যাতে তারা (সুপথে) ফিরে আসে, (রূম : ৪১)।

অন্যত্র বলেন- ‘গুরুশাস্তির (অর্থাৎ জাহান্নামের শাস্তির) আগে আমি অবশ্যই তাদেরকে লঘুশাস্তি ভোগ করাব, যাতে তারা ফিরে আসে’ (সাজদা : ২১)।

পার্থিব জীবনের মানুষিক আস্থিরতা,চিন্তা- পেরেশানি, বালা-মসিবত ও দুঃখ-কষ্টই হল সেই লঘুশাস্তি, যা আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাদের অবাধ্যাচরণ ও পাপকর্মের কারণে দিয়ে থাকেন।

আত্মপ্রশান্তির জন্য পাপমুক্ত জীবনাচরনের পাশাপাশি
১/যিকিরের অভ্যাস করা (আল্লাহকে স্মরণ করা)
২/দোয়া করা (আল্লাহকে ডাকা বাপ্রার্থনাকরা)
৩/ইস্তিগফার করা(আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া)
৪/ইনাবত (সকল কাজ আল্লাহর উপর ন্যস্ত করা )
৫/অনর্থক কাজ ছেড়ে দেয়া

এ অভ্যাসগুলো যদি আমরা ব্যক্তি জীবনে চর্চা করতে পারি, তাহলে অনাবিল সুখ ও আত্মপ্রশান্তির ঝর্ণাধারা আমাদের হৃদয়ে প্রবাহিত হতে থাকবে।
এবং পরকালে আল্লাহ তায়ালার বিশেষ ওয়াদা জান্নাত লাভের সৌভাগ্য নসিব হবে।ইনশাআল্লাহ!

কাজী আরিফুর রহমান

শিক্ষক : আল- জামিয়াতুল আরাবিয়্যা (মাদানী নেসাব)

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

Mostbet Com’da Oynamak Mı Istiyorsunuz?…

ভার‌তের আধিপত্যবাদ ও বাংলা‌দেশ

Casinos Online Confiables Por Dinero…

আগে সংস্কার প‌রে নির্বাচন

Sådan Vælger Du Det Bedste…

1win Brasil Apostas E Cassino…

Best Online Casinos With Regard…