শনিবার দুপুর ১:১৭, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী ফাহমিদা প্রজেক্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মোকতাদির চৌধুরী এমপি ফাহমিদা প্রজেক্ট: অব‌হে‌লিত নারী‌দের কর্মসংস্থানে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ

ইমরান খান: ক্রি‌কেট মঞ্চ থে‌কে রাজনী‌তির ম‌ঞ্চে

৫৫৫ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

২০১৮ সালের ২৫ জুলাই  পাকিস্তানের ১১তম সাধারন নির্বাচন  হয়ে গেল। নির্বাচনে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খানের  দল পিটিআই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আরও কিছু দলের সহযোগিতায় কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করেছে এবং স্বয়ং ইমরান খান নিয়াজী ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট পাস্তিানের ২২ তম প্রধানমন্ত্রী  হিসেবে শপথ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইমরান খান জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম রেডিও-টেলিভিশন ভাষণে সুইডিশ মডেল অনুসরন করে পাকিস্তানকে একটা কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে পরিণত করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। এটা অবশ্যই স্বীকৃত সত্য সুইডেন পৃথিবীর একটি অন্যতম উন্নত ও কল্যানমুখী রাষ্ট্র। প্রত্যেক দেশের প্রধানমন্ত্রীই স্বপ্ন দেখেন তার দেশ ও জাতিকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে যওয়ার। ইমরান খানও এর ব্যতিক্রম নন।

পাকিস্তানের রজনীতিতে ভুট্টো ও শরিফ পরিবারের প্রভাব অনেক আগে থেকেই। সামরিক শাসক বাদ দিলে এই দু’টি পরিবরের সদস্যদের হাতেই মূলত পাকিস্তানের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। তবে এবারের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে ইমরান খানের দল পিটিআই এর জয়  দেশটির  রাজনীতিতে সেই পরিবারতন্ত্র প্রথা ভেঙ্গে দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে এক যুগান্তকারী ইতিহসের সূচনা করেছে।

এদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী আর্ন্তজাতিক সংস্থাগুলো বলেছে, ভোটকেন্দ্রে মোতায়েন করা সেনা সদস্যরা ভোটে কোনো হস্তক্ষেপ করেন নি;নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা ইমরান খানকে অভিন্দন জানিয়েছে।

ইমরান খানের বয়স এখন ৬৫ বছর। পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম নেওয়া ইমরান খানের পুরো নাম ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি। তবে ক্রিকেট বিশ্বে ইমরান খান নামেই খ্যাতি কুড়ান তিনি। ১৯৭১ সালে আন্তরর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ১৯৯২ সালে একক নৈপূন্যে বিশ্বকাপ জয় করেন। অলরাউন্ডার  নৈর্পূন্যে তার সময়ের সেরাদের কাতারেই ছিলেন। টেষ্টে ৩০০ উইকেট ও ৩০০০ রান নিয়ে তিনি রেকর্ড বুকে নাম লেখান। সেই শৈশব কাল থেকে ইমরান খান আমার প্রিয় খেলোয়ার। তার ব্যাটিং ও বোলিং স্টাইল দু’টোই  আমাকে মুগ্ধ করে। ইমরান খানের প্রতিটি খেলা আমি টেলিভিশনে দেখেছি। আর বাংলাদেশে যত বারই খেলতে এসেছে তত বারই ষ্টেডিয়ামে গিয়ে সরাসরি তার খেলা উপভোগ করেছি ও খেলা শেষে গ্রিনরুম  অথবা হোটেল লাউঞ্জে গিয়ে তার  অটোগ্রাফ নিয়েছি। অনেক সময় সুযোগ পেলে ছবিও তুলেছি। আমি যত বারই ইমরান খানকে সরাসরি  অতি কাছ থেকে দেখেছি ততবারই   তার  বাচন ভঙ্গি,  ভদ্রতা ও মুখচ্ছবি আমাকে বিমুগদ্ধ করেছে।

ইমরান খানের ২১ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার ছিল নানা অজর্নের। “পাকিস্তানের ক্রিকেট জাদুকর”, পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন” ও “পাকিস্তানের প্রতিভা” এমন বিশেষণ তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আশির দশকের শুরুতে ইমরান খানকে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার মানা হতো। অন্তত পাঁচ বছর ক্রিকেট বিশ্বে  রাজত্ব করেছেন তিনি। ৩৯ বছর বয়সে শেষ উইকেট শিকার করে ক্রিকেটকে বিদায় জানান।১৯৯৬ সালে “তেহরিক-ই-ইনসাফ” রাজনৈতিক দল গঠন করে সবাইকে চমকে দেন তিনি।

ইমরান খান ধার্মীক ও র্দুনীতিমুক্ত সাধারন মানুষ। কিন্তু পর পর তিনটি বিয়ে করার জন্য নিন্দুকেরা তার তীব্র সমালোচনা করে থাকেন। তবে এর জবাবে ইমরান খান বলেন,“আমি ধর্মীয় ও সামাজিক বিধান মেনেই বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনটি বিয়ে করেছি, কোনো অন্যায় কাজ করিনি। কখনো কোনো র্দুনীতি করিনি, বিদেশে টাকা পাচার করিনি, কোনো কর ফাঁকি দেইনি এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মুলক কোনো কাজে কখনো জড়িত হইনি। তবে এ কথা অপ্রিয় হলেও সত্য যে, যুবক বয়সে ইমরান খান একজন রমনীমোহন প্লেবয় হিসেবে,-যিনি ক্রিকেট খেলার অন্ধিসন্ধি যেমন জানতেন, তেমনি চিনতেন লন্ডনের নাইট ক্লাব গুলো।

বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব ইমরান খান কোনো বালক, কিশোর বা যুবক নন, একজন পরিপূর্ণ বয়স্ক রাজনীতিবিদ,শিক্ষিত এবং সর্বক্ষেত্রে অভিজ্ঞ। নির্বাচনের পরেরদিন, প্রধামন্ত্রী হিসেবে তখনো শপথ নেওয়া হয়নি এক টিভি সাক্ষাৎকারে ইমরান খান যে দিকগুলোর দিকে ইঙ্গিত দিয়ে অথবা সমস্যা হিসেবে চিহিৃত করেছে তার প্রথমটাই হলো পাক-ভারত সমস্যা অর্থাৎ কাশ্মীর সমস্যা। দ্বিতীয়ত দরিদ্রতা, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ;  শুধু উপমহাদেশ নয়, বিশ্বশান্তির জন্যও। পাক-ভারত সমস্যার ব্যাপারে বলেছেন,ভারত এক কদম এলে পাকিস্তান দুই কদম এগিয়ে যাবে। অত্যন্ত সুন্দরভাবে উর্দুভাষী খান ইংরেজিতে যা বলেছেন তা শুধু সুমিষ্ট নয় বরং সৌন্দর্যমন্ডিত এবং গ্রহনযোগ্য।

নির্বাচণী প্রচারনার ইস্তেহারে তিনি কৌশলগত কারনে কাশ্মীর সম্যার ওপর তেমন জোর দেননি। তবে তিনি বিনা যুদ্ধে জাতিসংঘের দেওয়া সিদ্ধান্তের  বা নির্দেশমতোই এটির স্থায়ী সমাধান চান।কিন্তু এ কথা সত্য যে,পাকিস্তানের মতো শক্তিধর সেনাবাহিনীর ওপর র্নিভর করেই ইমরান খানকে  এ সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।যদিও তিনি কোনো টেষ্ট ক্রিকেটে ভারতের কাছে কখনো পরাজিত হননি।তবে  কাশ্মীরের ক্ষেত্রে কোনো জয়-পরাজয় নয়, এখানে দরকার  সৌহার্দ্যপূর্ণ  স্থায়ী সমাধান।

প্রথম কাশ্মীর সমস্যা, দ্বিতীয় দারিদ্র্য দূরীকরন,তৃতীয় বাংলাদেশ,ভারত,সৌদি আরব,ইরান চীন ও আমেরিকাসহ সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক চান।চতুর্থটি হলো, দুর্নীতির সূত্র কোথায়,কেন দুর্নীতির প্রতি কিছু লোকের এত আগ্রহ এবং কীভাবে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এর স্থায়ী সমাধানের পন্থা বের করা।এ ছাড়াও তালেবানদের সঙ্গে আলোচনা করে আফগান সমস্যা সমাধানেও তিনি প্রচন্ড আশাবাদী।

প্রাধানমন্ত্রী হিসেবে তার র্বতমান দায়িত্ব হলো দ্রুত নিজের ভাবমূর্তিকে বিরোধী রাজনীতিক থেকে সরকারপ্রধানের জায়গায় স্থানান্তর করা এবং ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করা বিরোধী দলগুলোর ক্ষোভের আগুনে যত তারাতারি সম্ভব পানি ঢেলে দেওয়া।

পাকিস্তানের সুশীলসমাজের অনেকেই  একাওরের ঘটনাবলির জন্য   বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চওয়ার দাবি তুলেছেন। এসব গুণী ব্যক্তির মিছিলও হয়েছে ইসলামাবাদের সড়কে।কিন্তু ইমরান খানই সম্ভবত প্রথম ব্যক্তি যিনি ক্ষমা চাওয়ার  বিষয়টি প্রকাশ্যে তুলে ধরেন। কারণ তিনি মনে করেন,একাওরের ঘটনাবলির জন্য  পাকিস্তানকে অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের কাছে  ক্ষমা  চাইতে হবে। তবে তিনি উল্টোরথেও যাত্রা করেন একসময়। অন্যতম শীর্ষ যুদ্ধারাধী কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ডের  পর  তিনি সামালোচনায় মুখর হন। এরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন পরে, বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এবং আসল লোককে শাস্তি না দিয়ে নকল লোককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে মনে করে এমনটা তিনি করেছেন।

অত‌্যান্ত দুঃ‌খের স‌ঙ্গে বল‌তে হ‌চ্ছে, গত ৯ এ‌প্রিল মধ‌্যরা‌তে অনাস্থা ভো‌টে হে‌রে যান এক সময়কার মাঠ কাপ‌নো খে‌লোয়ার ও পা‌কিস্তা‌নের চলমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজী। দেশ‌টির ই‌তিহা‌সে এর আ‌গে অনাস্থা ভো‌টে হে‌রে কো‌নো প্রধানমন্ত্রী পদ হারা‌নি। উক্ত অনাস্থা ভো‌টের অ‌ধি‌বেশন শুরু আ‌গে জাতীয় প‌রিষ‌দের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপু‌টি স্পিকার কা‌সিম সুরি পদত‌্যাগ ক‌রেন। এমতাবস্থায় অ‌ধিবেশন প‌রিচালনা ক‌রেন সা‌বেক স্পিকার আয়াজ সা‌দিক। জাতীয় প‌রিষ‌দের ৩৪২ ভো‌টের ম‌ধ্যে ১৭৪ ভোট অনাস্থা ভো‌টের প‌ক্ষে প‌ড়ে। প্রস্তাব পা‌সের জন‌্য দরকার ছিল ১৭২ টি ভোট। ইমরান খা‌নের ক্ষমতাসীন দল পি‌টিআই-এর আইনপ্রনেতারা এ ভো‌টে অংশ নেন‌নি। উ‌ল্লেখ, পি‌টিআই এর সদস‌্য ১৫৫ এবং অন‌্য ছয়‌টি দ‌লের ২৩ সদ‌স্যের সমর্থন ইমরান খা‌নের সরকার গ‌ঠিত হ‌য়ে‌ছিল।  কিন্তু সমমনা দ‌লের ১০ জন সদ‌স্যের বিশ্বাসঘাতকতার জন‌্য  মাত্র চার ভো‌টের ব‌্যবধা‌নে ইমরান খান সরকা‌রের পতন হল!

প্রসঙ্গত,গত ৩ এ‌প্রিল পা‌কিস্তা‌নের জাতীয় প‌রিষ‌দে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খা‌নের বিরু‌দ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আ‌নেন বিরোধী জোট। কিন্তু উক্ত অনাস্থা প্রস্তাব খা‌রিজ ক‌রে দেন জাতীয় প‌রিষ‌দের ডেপু‌টি স্পিকার কা‌সিম সু‌রি। প‌রে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় প‌রিষদ ভে‌ঙ্গে দেন রাষ্ট্রপ‌তি আ‌রিফ আল‌বি। অতঃপর  ওই দিনই এই অনাস্থা প্রস্তাব খা‌রি‌জের বৈধতা নি‌য়ে  শুনা‌নি গ্রহন ক‌রেন পা‌কিস্তা‌নের সু‌প্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিনের দীর্ঘ শুনা‌নি শে‌ষে গত ৭ এ‌প্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খা‌রিজ ও জাতীয় প‌রিষদ ভে‌ঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধা‌ন্তের বিপ‌ক্ষে রায় দেন দেশ‌টির স‌র্বোচ্চ আদালত। তারপর উক্ত আদাল‌তের আ‌দে‌শে অনাস্থা প্রস্তা‌বের ওপর গত ৯ এ‌প্রিল গভীর রা‌তে ভোটা‌ভো‌টি অনু‌ষ্ঠিত হয়। প‌রের দিন বি‌রোধী জোট থে‌কে মুস‌লিম লী‌গের (শরীফ) শাহবাজ শ‌রিফ প্রধানমন্ত্রী হি‌সে‌বে শপথ গ্রহন ক‌রেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সা‌লের অ‌ক্টোবর পর্যন্ত ক্ষমতায় থাক‌বেন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নে‌বেন এবং সেই সরকার  নির্বাচন দি‌বেন।

উ‌ল্লেখ, শাহবাজ শরীফ  ও তার ছে‌লে হামজা শরী‌ফের বিরু‌দ্ধে ১ হাজার ৪০০ কো‌টি পা‌কিস্তা‌নি রু‌পি বি‌দে‌শে পাচা‌রের অ‌ভি‌যোগ আদাল‌তে চলমান র‌য়ে‌ছে। কিন্তু সদ‌্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খা‌নের  বিরু‌দ্ধে এ ধর‌নের(দুর্নী‌তি বা স্বজনপ্রী‌তির) কো‌নো  অ‌ভি‌যোগ নেই। এই দিক‌দি‌য়ে সে নি‌টেন ক্লিন ই‌মে‌জের লোক। ইমরান খান একাধা‌রে সৎ, সংস্কৃ‌তিমনা, ধার্মীক, স্পষ্টবাদী, মান‌বিক, উচ্চা‌শি‌ক্ষিত ও অ‌ভিজ্ঞরাজনী‌তি‌বিদ। অথচ পা‌কিস্তা‌নের ৭৫ বছ‌রের ই‌তিহা‌সে এধর‌নের গুণাবলীর অ‌ধিকারী ব‌্যক্তি কখ‌নো ক্ষমতায় আ‌সে‌নি! ইমরান খান ছি‌লেন মা‌র্কিন বি‌রোধী, সামন্ততন্ত্র বি‌রোধী, প‌রিবারতন্ত্র বি‌রোধী। তাঁর তীক্ষ্ণ মেধার ব‌দৌল‌তেই দ‌ক্ষিণ এ‌শিয়ার ভূরাজনী‌তি‌তে এক‌টি বড় প‌রিবর্তন এ‌সে‌ছে। সে‌টি হ‌চ্ছে রা‌শিয়া-ইউ‌ক্রেন ইস‌্যু‌তে ভারত ও পা‌কিস্তান একই জায়গায় অবস্থান কর‌ছে। এ‌টি এক‌টি নত‌ুনত্ব, আ‌গে কখ‌নোই এ রকম হয়‌নি! য‌দি বড় আকা‌রে  দ্বিতীয়বার এককভা‌বে ইমরান খান নির্বা‌চিত হ‌য়ে আস‌তে পা‌রেন, তা হ‌লে হয়রতা দ‌ক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূরাজনী‌তি‌তে আ‌রো নতুনত্ব ও চমক আস‌বে।

বি‌ভিন্ন ইস‌্যু‌তে বর্তমান সেনাপ্রধান জেনা‌রেল কামার বাজওয়ার সা‌থে ম‌তের মিল না হওয়া, আফগা‌নিস্তা‌নে মান‌বিক সাহায‌্য অব‌্যাহত রাখা ও মা‌র্কিন অনু‌রোধ উ‌পেক্ষা ক‌রে ইউ‌ক্রেন হামলার আ‌গে রা‌শিয়া সফর-মূলত এ তিন‌টি প্রধান কার‌ণেই  ইমরাখান সরকা‌রের পতন হয়। দুঃখজনক পা‌কিস্তা‌নের বি‌রোধী জোট তা বোঝ‌তে পার‌লো না!  ২০১৮ সা‌লের  ১৮  আগস্ট পা‌কিস্তা‌নের ১১ তম প্রথানমন্ত্রী হি‌সে‌বে শপথ গ্রহ‌নের পর পরই   প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বেশ কিছু প্রসংশনীয়  সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি‌লে;যেমন, পাকিস্তান বিমানবন্দরে সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিশেষ প্রটোকল বাতিল,চলচ্চিত্রের নগ্ন পোষ্টার প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষনা করা, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাস ভবন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা ও বাংলাদেশ ও আগানিস্তান থেকে আসা শরনার্থীদের পাকিস্তানের নাগরিত্ব প্রদান। এধর‌নের সাহসী ও মান‌বিক পদ‌ক্ষেপ পূ‌র্বের কো‌নো সরকার প্রধান কখ‌নো গ্রহন ক‌রেন‌নি!

পাকিস্তান এখন  নতুনভাবে চলবে, নতুন নেতৃত্বে অগ্রসর হবে। ইমরান খান তার দেশবাসীকে ‘নতুন পাকিস্তান’ উপহার দেওয়ার কথা বলেছেন, একটি দুর্নীতিমুক্ত পাকিস্তনের কথা বলেছেন। আমরা তার সাফল্য কামনা করি । দেখা যাক , এই দীর্ঘ ইংনিসে তিনি কেমন খেলেন এবং পরিচালনা করেন। কেননা তিনি এখন আর ক্রিকেট দলের প্রধান নন বরং সরকার প্রধান। প‌রিতা‌পের বিষয়, ইমরান খান সেই কা‌ঙ্খিত সময় পান‌নি।

উ‌ল্লেখ,এই প্রবন্ধটি লি‌খে‌ছিলাম প্রায় চার বছর পূ‌র্বে পা‌কিস্তা‌নের ২২ তম প্রধানমন্ত্রী হি‌সে‌বে ইমরান খা‌নের শপথ গ্রহ‌নের এক দিন পর। আর বর্তমা‌নে আ‌গেকার লিখা‌টি‌কেই আপ‌ডেট ক‌রে লি‌খে‌ছি প্রধানমন্ত্রী হি‌সে‌বে  ইমরান খা‌নের পদত‌্যা‌গের এক দিন পর। প‌রি‌শে‌ষে বল‌তে চাই, ইমরান খা‌নের ম‌তো একজন নির্বা‌চিত ও অ‌ভিজ্ঞ সরকার প্রধা‌নের পদত‌্যাগ পৃ‌থিবীর দ‌রিদ্র ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধা‌নের জন‌্য অ‌শনি সং‌কেত।  সুতরাং ইমরান খা‌নের এই বিপর্যয় থে‌কে যথাযথ শিক্ষা নি‌য়ে তা‌দের‌কে আগামীর প‌থে এ‌গো‌তে হ‌বে।

খায়রুল আকরাম খান : ব্যুরো চীফ, দেশ দর্শন ডটকম

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

হিজবুল্লাহকে ইসরাইলের কঠিন হুশিয়ারি

‌ফি‌লি‌স্তি‌নের রক্তঝরা ইতিহাস

বিপদে ভেঙ্গে পড়া নয়, কৃতজ্ঞতাবোধ…

মান‌সিক অস্থিরতা দূর করতে কোন…

প‌রিবার ও সম্প্রী‌তির বন্ধন

অর্থই কি সব সু‌খের মূল?