শনিবার সকাল ১০:০৩, ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
হাফেজ আবুল হাসান কুমিল্লার হুজুরের জানাযায় জনতার ঢল ‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পলাতক চেয়ারম্যানদের রিট: চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

২৫৭ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ১ টি

এটা সবাই জানে যে, ২০১৪ সাল থেকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার ও কোনো পর্যায়ের নির্বাচন স্বাভাবিক ভাবে হয়নি। এমনকি পেশাজীবী সংগঠনগুলোর নির্বাচনও একই ভাবে হাসিনা স্টাইলে হয়েছে। এর ফল স্বরূপ দেশের কোনো পর্যায়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। এর ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে। সব জায়গায় ছিল স্বৈরতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র।

বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদগুলো থেকে সেবা পেতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের অন্ত ছিল না। জাতীয়তা সনদপত্র, ওয়ারিশ সনদপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুনিবন্ধন ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় প্রত্যয়নপত্র পেতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের সীমা-পরিসীমা ছিল না। যারা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল তারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এসব সেবা নিতে পারতেন। সাধারণ মানুষ যারা টাকা-পয়সা খরচ করতে পারতো না তারা মাসের পর মাস ঘুরেও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো নাগরিক সেবা পেতো না। এমন রেকর্ড আছে যে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ১০ মাসেও একটি জন্মনিবন্ধন সনদপত্র ইস্যূ করতে পারেনি। পারেনি বললে ভুল হবে। মূলত চেয়ারম্যানদের পকেটে মোটা অঙ্কের টাকা না যাওয়ায় তারা ডকুমেন্টে স্বাক্ষর করেনি।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার অনলাইন জন্মনিবন্ধন সার্ভার চালু করেছিল ২০০৬ সালে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২০ সালে নতুন আরো একটি সার্ভার চালু করে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনস্থ জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের অফিস। সে সার্ভারটি যথেষ্ট ভাল। যে কোনো জায়গা থেকে জন্মনিবন্ধনের আবেদন করে পরিষদে জমা দিলে খুব সহজেই নির্ভুল জন্মনিবন্ধন পাওয়া সম্ভব। নতুন সার্ভারে ইউনিয়ন পরিষদের তেমন কোনো কাজ নেই। ইউনিয়ন পরিষদের অ্যাডমিনের কাজ হলো জন্মনিবন্ধনের নাম্বার জেনারেট করে রেজিস্ট্রেশন দিয়ে সার্ভার থেকে প্রিন্ট কপি বের করা। এরপর সচিব ও চেয়ারম্যান/প্রশাসক স্বাক্ষর করে ডেলিভারী দেয়া।

এটুকু কাজ করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৮/১০ মাসেও জন্মনিবন্ধন ডেলিভারী দিতে পারেনি। পারেনি মানে ইচ্ছে করেই দেয়নি। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ইচ্ছেমত হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে সে হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা সরকারি ট্রেজারিতে জমা দেয়া হয়নি। জনগণের পরিশোধ করা হোল্ডিং ট্যাক্সের সব টাকা বিনা ভোটের চেয়ারম্যানরা নিজেদের পকেটে ভরেছে। মোট কথায় আওয়ামী আমলে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সীমাহীন নৈরাজ্য চলেছে। বিনাভোটের চেয়ারম্যান/মেম্বাররা যতপ্রকার স্বেচ্ছাচারিতা আছে সবই করেছে।

গতবছরের ৫ অগাস্ট গণবিপ্লবে হাসিনার পতন ও দেশ থেকে পালানোর পর এসব বিনাভোটের চেয়ারম্যান জনরোষে এলাকায় আসে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পালিয়ে থাকায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে প্রদান করে। এরমধ্যে কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পলাতক অবস্থায় কিছুদিন ডকুমেন্ট স্বাক্ষর করেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ আসায় এটা বন্ধ হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নেতৃত্ব প্রশাসকরা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম সচল রাখেন। এভাবে ভালই চলছিল।

এর মধ্যে আবার পলাতক চেয়ারম্যানরা উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে গতবছরের ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করে। সীতাকুন্ড উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন। এরমধ্যে ৯নং ভাটিয়ারী এবং ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিট পিটিশন করা থেকে বিরত থাকেন। ৭ ইউপি চেয়ারম্যানের রিট পিটিশন দায়ের পর হাইকোর্ট বিভাগ ৭ ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান সংক্রান্ত আদেশের কার্যকারিতা পরবর্তী ৬ (ছয়) মাসের জন্য স্থগিত রাখার রায় দেয়।

এদিকে এ রায়ের পরও পলাতক কোনো চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করেনি। আদালতের রায়ের কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউনিয়ন পরিষদের কোনো ডকুমন্টে স্বাক্ষর করেন না। জনরোষে চেয়ারম্যানরাও ইউনিয়ন পরিষদে আসে না। এসবের ফলশ্রুতিতে ইউনিয়ন পরিষদগুলো সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে অচলাবস্থার কারণে জনগণ সবধরণের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিকল্পিত ভাবে জনসাধারণকে চরম ভোগান্তিতে ফেলার প্রতিবাদে এবং সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত এবং এ অবৈধ চেয়ারম্যানদের গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জনসাধারণ।

এ সময় জনসাধারণের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কাজী সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ মোরসালিন, জয়নাল আবেদীন দুলাল, জহুরুল আলম জহুর, কাজী মহিউদ্দীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মনসুর, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর চৌধুরী, নুরুল আনোয়ার, কাজী এনামুল বারী, এডভোকেট আইনুল কামাল, মো. আকবর হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন, সালামাত উল্লাহ, ইদ্রিস মেম্বার, ইদ্রিস মিয়া, রবিউল হকসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

এখানে বড় প্রশ্ন হলো: পলাতক চেয়ারম্যানরা আইনী প্রতিকার পায় কিভাবে? সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতকে কি অবগত করা হয়েছে যে,  জনরোষের আতঙ্কে এসব বিনাভোটের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে আসে না। বিনাভোটের পলাতক চেয়ারম্যানরা এমনিতেই দৌড়ের ওপর থাকার কথা। কারণ তাদের সবার নামেই মামলা হয়েছে। অথচ তারা উল্টো পরিকল্পিত ভাবে জনসাধারণের দুর্ভোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোট পাকাচ্ছে! সরকারের দূর্বল অবস্থান, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে পতিত স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা বসে থাকায় এ ধরণের পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। এ অচলাবস্থা তৈরীর পেছনে ইউনিয়ন পরিষদগুলোর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উদ্যোক্তাদের যোগসাজস রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উদ্যোক্তারা সবাই বিগত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত। তাদের কারো মৌলিক কোনো রদবদল ও ট্রান্সফার হয়নি।

তাদের সাথে পলাতক চেয়ারম্যানদের যোগাযোগ রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উদ্যোক্তারা অচলাবস্থার তৈরীর নেপথ্যে ভূমিকা পালন করছে। এরা ও পতিত ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা এবং সহযোগীরা যোগসাজস করে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে সীতাকুন্ডের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে অচলাবস্থা তৈরী করেছে। পলাতক চেয়ারম্যানরা জনরোষে এলাকায় আসবে না। আইনী জটিলতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডকুমেন্ট স্বাক্ষর করবেন না। এখানে সাধারণ জনগণের অপরাধ কি? তারা কেন ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে অচলাবস্থার কারণে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবে? দেশটা মগের মুল্লুক? যে যার ইচ্ছেমত আদালতে প্রভাব খাটিয়ে অচলাবস্থা তৈরী করে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলবে?

অনতিবিলম্বে সীতাকুন্ডের ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের অচলাবস্থা নিরসনের মাধ্যমে জনগণের জরুরি নাগরিক সেবা চালু করার জন্য স্থানীয় সরকার ও আইন মন্ত্রণালয়কে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

লেখক: গল্পকার, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

 

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

১ কমেন্ট “পলাতক চেয়ারম্যানদের রিট: চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

Leave a Reply

Fb777 Pro Official Website Delightful…

Fb777 Log In Register With…

Fb777 Sign In Effortless Access…

Najlepsze Kasyno Online Nadprogram Powitalny…

Recenzja Kasyna Na Żywo: Betsafe

Betsafe Kasyno: Elitarny Zbiór Turniejowy

Get 100% Nadprogram Actual Promotions

Hell Spin Bonus Codes Updated…

Hellspin Casino Review: Games, Bonuses,…

20bet Bonus Weekly Bonuses Plus…