example.com

Verify you are human by completing the action below.

example.com needs to review the security of your connection before proceeding.
মব জা‌স্টিস : প্রেক্ষিত বাংলা‌দেশ-২য় পর্ব – দেশ দর্শন
বুধবার রাত ২:১১, ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
হাফেজ আবুল হাসান কুমিল্লার হুজুরের জানাযায় জনতার ঢল ‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মব জা‌স্টিস : প্রেক্ষিত বাংলা‌দেশ-২য় পর্ব

৬৪৭ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

বস্তত মব জাস্টিস বা মব লি‌ঞ্চিং সমা‌জে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার জন্ম দেয়। আইন ও নৈ‌তিকতার প্রতি অসম্মান বৃ‌দ্ধি পায়। ফ‌লে সামা‌জিক স্থি‌তিশীলতা বি‌ঘ্নিত হয়। এটার মাধ‌্যমে বিচার প্রক্রিয়া ভে‌ঙ্গেপ‌ড়ে, অ‌ভিযুক্ত ব‌্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থ‌নের সু‌যোগ থে‌কে ব‌ঞ্চিত হয়। ফ‌লে প্রকৃত অপরাধী শা‌স্তি পায় না বা অপরাধ‌ চি‌হিৃত করা যায় না।

আমা‌দের দে‌শে প্রায়ই দেখা যায় যে, মব জ‌স্টি‌সের সময় যখন প‌রি‌স্থি‌তি উতপ্ত ও  ভয়াবহ হ‌য়ে ও‌ঠে, তখন আইনশৃঙ্খলা বা‌হিনী ঘটনাস্থ‌লে এসে হস্ত‌ক্ষেপ করার চেষ্টা ক‌রে। কিন্তু ততক্ষ‌নে স‌হিংসতা ঘ‌টে যায়। এক্ষে‌ত্রে প্রায় সময়ই অপরাধীরা পা‌লি‌য়ে যায়। ফ‌লে অ‌নেক সময় আইনগত ব‌্যবস্থা নি‌তে দে‌রি হয়।
বলবার অ‌পেক্ষা রাখে না যে, মব জা‌স্টিস এক‌টি ফৌজদা‌রি অপরাধ।‌ ফৌজদ‌া‌রি দন্ড‌বি‌ধি অনুযায়ী, গণ‌পিটু‌নি‌তে কেউ গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হ‌লে, আঘাতকারীরা ৩২৫ ধারার অধী‌নে সাত বছর পযর্ন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রমে দ‌ন্ডিত হ‌বে। এছাড়া  দন্ড‌বি‌ধির ৩৩৫ ধারা অনুযায়ী কারাদন্ড ও অর্থ উভয় দ‌ন্ডেও দ‌ন্ডিত হ‌তে পা‌রেন আঘাতকারীরা।
এছাড়‌া গণ‌পিটু‌নি‌তে য‌দি কেউ মারা যায় আর সেটা য‌দি খুন হি‌সে‌বে আদাল‌তে প্রমাণ করা যায়, তাহ‌লে দন্ড‌বি‌ধি ১৮৬০ এর ২৯৯ ধারায় উল্লে‌খিত খু‌নের অপরাধীকে ৩০২ ধারার অধী‌নে মৃত‌্যুদন্ড  অথবা যাবজ্জীবন ক‌ারাদন্ড এবং জ‌রিমানা দ‌ন্ডেও দন্ডিত করা যায়। এছাড়া গণ‌পিটু‌নিকা‌লে কো‌নো ব‌্যক্তি‌কে য‌দি সাম‌ান‌্য আঘাতও করা হয়, ত‌াহ‌লে ৩১৯ ধারায় উল্লে‌খিত আঘা‌তের অপরা‌ধে অপরাধী‌কে ৩২৩  ধারার অধী‌নে  এক বছরের  সশ্রম বা বিনাশ্রমে কারাদন্ড  অথবা ১০০০ টাকা জরিমানা করা যা‌বে। এছাড়াও গণ‌পিটু‌নি‌তে  যারাই অংশ নে‌বেন, সেটা আদাল‌তে প্রমাণ করা গে‌লে সবারই শা‌স্তি নি‌শ্চিত করার সু‌যোগ আছে। এক্ষে‌ত্রে কেউ বড় ধর‌নের জখম কর‌লেও যে শা‌স্তি পা‌বেন, একজন সামান‌্য ধাক্কা দি‌লেও একই শা‌স্তির  আওতাভুক্ত হ‌বেন।
কিন্তু আমা‌দের দেশর‌ প্রেক্ষি‌তে গণ‌পিটু‌নির মামলায় যথাযথ বিচার পাওয়া  দুরূহ ব‌্যাপার ব‌টে। আদাল‌তে বাদীপ‌ক্ষের  সাক্ষী‌কে প্রমাণ কর‌তে হয় গণ‌পিটুনকা‌লে কার আঘা‌তে বিচারপ্রার্থী আহত হ‌য়ে‌ছেন বা ভিক্টীম নিহত হ‌য়ে‌ছেন।
ত‌বে মব জা‌স্টিসকা‌লে ৪/৫ জন মি‌লে কাউকে পি‌টি‌য়ে  হত‌্যা কর‌লে এটা নির্ণয় করা সম্ভব কার পিটু‌নি‌তে ভিক্টী‌মের মৃত‌্যু হ‌য়ে‌ছে। কিন্তু শত শত‌ লোক যখন গণ‌পিটু‌নি‌তে অংশ নেয়, তখন তা  নির্ণয় করা ক‌ঠিন।  সে‌ক্ষে‌ত্রে সবাই সমানভা‌বে দায়ী। কিন্তু সাক্ষ‌্য আইনে আবার হত‌্যাকা‌ন্ডে কার কী ভূ‌মিকা ছিল তা আদাল‌তে সু‌নি‌র্দিষ্টভা‌বে প্রমাণ কর‌তে হয়। আবার মামলার সাক্ষী পাওয়াও ক‌ঠিন হয়।  এছাড়া পু‌লিশও দ‌ায়ছাড়া ধর‌নের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতি‌বেদন আদাল‌তে দা‌খিল ক‌রেন। এসব কার‌ণে সুষ্ঠু ও ন‌্যায় বিচা‌রের স্বা‌র্থে বাংলা‌দে‌শের স‌র্বোচ্চ আদালত গণ‌পিটু‌নির ঘটনার প্রেক্ষি‌তে মামলা করার জন‌্য কিছু নি‌র্দেশনা দি‌য়ে‌ছে। এর ম‌ধ্যে র‌য়ে‌ছে দ্রুত মামলা করা, আলামত সংরক্ষণ করা করা, এএস‌পির নি‌চে নয় এমন পু‌লিশ কর্মকর্তাকে দি‌য়ে মামলার তদন্ত করা। কিন্তু বাস্ত‌বে তা অনুসরণ করা হ‌চ্ছে না!! ফ‌লে দে‌শে গণ‌পিটু‌নি‌তে গুরুতর আহত, হত‌্যা ও হেনস্তার সংখ‌্যা দিন দিন বে‌ড়েই চল‌ছে। অথচ সরকারবাহাদ‌রের এইদি‌কে কো‌নো খেয়ালই নেই!
প্রসঙ্গত, জুলাই-আগ‌স্টের বিপ্ল‌বের পর থে‌কে বাংলা‌দে‌শে মব জ‌া‌স্টিস নি‌য়ে ব‌্যাপক আলোচনা চল‌ছে।  গত ১৮ সে‌প্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যাল‌য়ের ফজলুল হক মুস‌লিম হ‌লে চোর স‌ন্দে‌হে মাসুদ কামাল তোফাজ্জল না‌মে  মান‌সিক ভারসাম‌্যহীন এক যুবক‌কে দুই দফায় পি‌টি‌য়ে হত‌্যা করা হয়। প্রায়  একইভা‌বে একইদি‌নে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের একদল শিক্ষার্থীর দফায় দফায় মারধ‌রে  উক্ত  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা‌নের ছাত্রলী‌গের সা‌বেক নেতা শামীম আহ‌মেদ প্রাণ হারান। উক্ত দুই স‌হিংস ঘটনা  দেশময় বেশ  আলোড়ন সৃ‌ষ্টি ক‌রে‌। এছাড়াও ‌শিক্ষক‌দের জোরপূর্বক পদত‌্যা‌গে বাধ‌্য করা, আদালত প্রাঙ্গ‌নে  আসামী‌কে লা‌ঞ্ছিত করা, মাজার ও  ম‌ন্দি‌রে হামলা  আরও উত্তেজনা  তৈ‌রি ক‌রে‌ছে। এসব  ঘটনায় প্রশাস‌নের  দে‌রি‌তে হস্ত‌ক্ষেপ ও অপরাধী‌দের বিরু‌দ্ধে দ্রুত ব‌্যবস্থা না নেওয়ার কার‌ণে জনসাধার‌নের ম‌ধ্যে  ক্ষোভ বাড়‌ছে। সুতরাং মানু‌ষের এই ক্ষোভ ও ব‌্যাকুলতা দূর করার  ল‌ক্ষ্যে  দ্রুত মব জা‌স্টি‌সের কারণগু‌লো চি‌হিৃত ক‌রে এর প্রতিকার করা দরকার।
আমা‌দের ম‌তো অনুন্নত দে‌শে মব জাস্টিস বি‌ভিন্ন কার‌ণে ঘট‌তে পা‌রে। যেমন-(১) যখন   আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অপরাধী‌দের বিরু‌দ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব‌্যবস্থা নি‌তে ব‌্যর্থ হয়, তখন মানুষ নি‌জের হা‌তে আইন তু‌লে‌ নেয়। (২) যখন বিচার বিভাগ দুর্বল হয় এবং অপরাধী‌দের শা‌স্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে  কাল‌ক্ষেপণ কর‌তে থা‌কেন, তখন  মানুষ অধৈর্য হ‌য়ে নিজ হাতই অপরাধীর বিচার  সম্পন্ন  ক‌রেন। (৩) সামা‌জিক অসা‌ম্যের কারণে নিম্নব‌র্গের বা সাধারণ মানু‌ষেরা আইনের সহায়তা পাওয়ার ক্ষে‌ত্রে অ‌নেক সমস‌্যার সম্মুখীন হয়। এই অবস্থায় তারা হতাশ হ‌য়ে নি‌জেরাই বিচার কর‌তে চায়। (৪)  রাজ‌নৈ‌তিক মূল‌্যবো‌ধের অবক্ষ‌য়ের ফ‌লে মানু‌ষের ম‌ধ্যে স‌হিংসতা ও অমান‌বিকতার প্রবণতা বৃ‌দ্ধি পায়। আর এই মান‌সিকতা মব জাস্টিস‌কে উস্কে দেয়।
বস্তুত, ম‌ানুষ যখন ক্রামাগত অন‌্যায় ও বিচারহীনতায় অ‌তিষ্ঠ হয়ে ও‌ঠে, তখনই ‘মব জাস্টিস’-এর প্রেক্ষাপট তৈ‌রি হয়। বলা যায়, ‘ মব জা‌স্টিস’ অস‌হিষ্ণু সমা‌জেরই প্রতিচ্ছ‌বি। ত‌বে মব জা‌স্টি‌সের ম‌তো বিপজ্জনক সমস‌্যা দূর কর‌তে কিছু কার্যকরী পদ‌ক্ষেপ গ্রহণ করা যে‌তে পা‌রে। যেমন-(১) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা‌হিনী‌কে আরও দক্ষ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দি‌য়ে শ‌ক্তিশালী করা উচিত, যা‌তে তারা দ্রুত ও স‌ঠিকভা‌বে অপরাধী‌দের আটক এবং বিচার প্রক্রিয়া নি‌শ্চিত কর‌তে পা‌রে। (২) আপামর জনগণের ম‌ধ্যে আইনি  স‌চেতনতা  ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থ বৃ‌দ্ধি করা  প্রয়োজন। সমা‌জের প্রতি‌টি মানুষ‌কে বোঝা‌তে হ‌বে যে, মব জাস্টিস আইনত অপরাধ ও এটি সমাজ‌কে সমূ‌লে ধ্বংস ক‌রে দেয়। (৩) স‌হিংসতার বিপরী‌তে শা‌ন্তি ও সংলাপ‌কে প্রাধাণ‌্য দেওয়ার সংস্কৃ‌তি আমা‌দের সমা‌জে তৈ‌রি কর‌তে হ‌বে। (৪) মব জা‌স্টি‌সের অ‌নেক  ঘটনাই গুজ‌বের ভি‌ত্তি‌তে ঘ‌টে। তাই গুজব প্রতি‌রো‌ধে কার্যকর পদ‌ক্ষেপ নি‌তে হ‌বে।  সরকা‌রের পাশাপা‌শি গণমাধ‌্যম ও সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌্যকে বিভ্রাুন্তিমুক্ত স‌ঠিক খবর প্রকাশ ও প্রচার  কর‌তে হ‌বে। গুজব ব‌ন্ধের জন‌্য  সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌্যমের  বি‌ভিন্ন প্ল‌্যাটর্ফমগু‌লো‌তে নজরদা‌রি বাড়া‌তে হ‌বে, যা‌তে গুজব ছড়া‌নো বন্ধ করা যায়। (৫)  মব জা‌স্টিস অ‌নেক সময় সামা‌জিক ও অর্থ‌নৈ‌তিক অসা‌ম্যের কার‌ণে ঘ‌টে। তাই সমা‌জে কর্মসংস্থান সৃ‌ষ্টি, দা‌রিদ্র‌তা দূরীকরন ও সু‌শিক্ষার ব‌্যবস্থা করা দরকার, যা‌তে অপরাধ প্রবণতা ক‌মে আসে। (৬) মানুষ য‌দি ম‌নে ক‌রে যে বিচারব‌্যবস্থা দ্রুত ও স‌ঠিকভা‌বে কাজ কর‌ছে, তাহ‌লে তারা কখ‌নো মব জা‌স্টি‌সের পথ বে‌ছে নে‌বে না। তাই বিচার ব‌্যবস্থার সংস্কার ও এর কার্যকারীতা বাড়া‌নো জরু‌রি।
এই পদ‌ক্ষেপগু‌লো কার্যকরভা‌বে  গ্রহণ করা হ‌লে, মব জা‌স্টিসের ম‌তো অপরাধসমূহ ধী‌রে ধী‌রে সমাজ  থে‌কে দূর করা সম্ভব। আর সমাজ থে‌কে মব জা‌স্টি‌সের ম‌তো ভয়াবহ অপরাধসমূহ দূর হ‌লে,আশা করা যায় সম‌া‌জে আইনের শাসন-ন‌্যায় বিচার-সমতা-‌নৈ‌তিকতা-স‌হিষ্ণুতা-মান‌বিকতা ও পরস্প‌রের ম‌ধ্যে
 সম্প্রী‌তির বন্ধন সুপ্রতি‌ষ্ঠিত হব।(সমাপ্ত)।
খায়রুল আকরাম খান
ব‌্যু‌রো চিফ : deshdorshon.com

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

পিআর পদ্ধ‌তির সু‌বিধা-অসু‌বিধা

শর‌তের কাশফুল

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি (৩য়…

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি

৪০ বছর পর শৈশ‌বের বন্ধু‌দের…