শুক্রবার দুপুর ১:১২, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ. ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ইসলাম তরবা‌রির জো‌রে প্রতি‌ষ্ঠিত হয়‌নি: আলেমদের সঙ্গে মোকতা‌দির চৌধুরী ফাহমিদা প্রজেক্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মোকতাদির চৌধুরী এমপি ফাহমিদা প্রজেক্ট: অব‌হে‌লিত নারী‌দের কর্মসংস্থানে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ

ফুটবল ও বাংলা‌দেশ (৩য় পর্ব)

৩২৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

১৯৭১ সা‌লের ১৬ ডি‌সেম্বর পা‌কিস্তা‌নের কাছ থে‌কে স্বাধীনতা অর্জ‌নের পর ১৯৭২ সা‌লের ১৫ জুলাই ব‌াংলা‌দেশ ফুটবল ফেডা‌রেশন প্রতি‌ষ্ঠিত হয়।  এর প্রায় দুই বছর পর ১৯৭৪ সা‌লে বাংলা‌দেশ আঞ্চ‌লিক সংস্থা এ‌শিয়ান ফুটবল কন‌ফেডা‌রেশন ও ১৯৭৬ সা‌লে ফুটব‌লের স‌র্বোচ্চ সংস্থা ফিফার সদস‌্য পদ

 লাভ ক‌রে। আর এই সময় থে‌কেই ঢাকায় ফুটব‌লে নতুন জোয়ার আ‌সে। বস্তুত ফুটবল ফেডা‌রেশ প্রতি‌ষ্ঠিত হওয়ার পর পরই ঢাকায় অব‌স্থিত পুরা‌নো ফুটবল ক্লাবগু‌লোর সা‌থে পাল্লা দি‌য়ে ঢাকায় নতুন নতুন ক্লাব গ‌ড়ে ও‌ঠে। এগু‌লোর ম‌ধ্যে উ‌ল্লেখ‌যোগ‌্য ছিল-আবাহনী ক্রীড়া চক্র, মু‌ক্তি‌যোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ, ব্রাদ‌ার্স ইউ‌নিয়ন, বাড্ডা জাগরনী সংসদ, কাওরান বাজার প্রগ‌তি সংঘ  সহ আ‌রো কিছু ফ‌ুটবল ক্লাব। ক্লাবগু‌লি‌তে ফুটব‌লে পাশাপা‌শি হ‌কি, ক্রিকেট ও  ভ‌লিবল  খেলাও নিয়‌মিতভা‌বে অনু‌ষ্ঠিত হ‌তো। ত‌বে ফুটবল অঙ্গ‌নে তারা আধু‌নিকতা নি‌য়ে আ‌সে এবং ফুটবল‌কে জন‌প্রিয় কর‌তে  অবদান রে‌খে‌ছে এবং এখ‌নো রাখ‌ছে।
এসব ক্লাবগু‌লো‌তে নিয়‌মিতভা‌বে খেল‌ছেন-কাজী সালাউদ্দীন, অম‌লেশ সেন, স‌ফিউল আ‌রে‌ফিন টুটুল, টুটুল হো‌সেন বাদশা, বাদল রায়, এনা‌য়েতুর রহমান, আব্দুল মোতা‌লেব,  কাজী আ‌নোয়ার হো‌সেন, ‌গোলাম রাব্বানী হেলাল, শেখ আসলাম, আশরাফ উদ্দীন চুন্নু, নান্নু, মঞ্জু, সালাম মু‌র্শেদী, আ‌শিষ ভদ্র, সাইদ হাসান কানন, মহ‌সিন, জো‌সি, আ‌মিনুল হক, ন‌কিব, জ‌নি, আহসানউল্লা মন্টু, এ‌মি‌লি, গাফফার,খুরশীদ বাবুল, টিপু, নও‌শের, আয়াজ, মিজান, সা‌দেক, জা‌মিল, আক্তার, ইউসুফ, আলমগীর, স‌ফিকুল মা‌নিক, ওয়া‌সিম, আজমত, হা‌লিম, সিজার, র‌কিব, পিযুস, গিয়াস, আমান, রোম্মান ওয়ালী সা‌ব্বির, জু‌য়েল রানা, মা‌নিক, প‌নির, গাউস, রেহান, এফ আই কামাল, রুপু, কায়সার হা‌মিদ, মো‌নেম মুন্না, আলফাজ আহমেদ, মামুনুল ইসলাম, আ‌রিফ খান জয় সহ আরো অ‌নে‌কে। এসব প্লেয়ার‌দের ড্রিব‌লিং, বল রি‌সিভিং, থ্রোইন,  ফ্রিকিক, কর্ণার কিক, বাইসাই‌কেল কিক, পেনাল্টি কিক, সতীর্থ‌দের মাঝে বলপাসিং ইত‌্যাদি ছিল নান্দ‌নিকতায় প‌রিপূর্ণ। তা‌দের খেলা দেখ‌তে স্টে‌ডিয়া‌মের গ‌্যালা‌রি দর্শ‌কে পূর্ণ হ‌য়ে যে‌তো, তিল ঠাঁই‌য়ের জায়গা থাক‌তো না। ব‌াংলা‌দে‌শের এসব তারকা খে‌লোয়াড়‌দের ক্রীড়া নৈপূণ‌্য  ও দক্ষতা দে‌খে কিছু বি‌দেশী ফুটবলার ঢাকার মা‌ঠে  খেলা শুরু ক‌রেন। অবশ‌্য এজন‌্য তারা ক্লা‌বের তরফ থে‌কে টাকাও পে‌তেন। তারা হ‌লেন-ইরা‌কের সা‌মির শা‌কির, ক‌রিম মোহাম্মদ, ইরা‌নের না‌সের হেজা‌জি, ভি‌জেন তা‌হি‌রি, রেজা নাল‌জেগার, পা‌কিস্তা‌নের কালা গফুর, আ‌শিক আলী, ফজলুর রহমান, আফজাল হো‌সেন, উজ‌বেকস্থা‌নের আজমত আবদু র‌হিমভ, রা‌শিয়ার সে‌র্গেই ঝুকভ, নাই‌জে‌রিয়ার এ‌মেকা ই‌জিউ‌গো, ইব্রা‌হিম সেঙ্গার, চিমা ও‌কেরী, নেপালের গ‌নেশ থাপা, কৃষ্ণ থাপা, মান বাহাদুর থাপা, ভুটা‌নের খরগ বাহাদুর বাসরাত, স্কটল‌্যা‌ন্ডের পলকা‌সিং, ভার‌তের চন্দ্রশেখর প্রসাদ, প্রভাকর মিশ্র, শ্রীলঙ্কার লায়‌নেস পি‌রিচ, পা‌কির আলী, ম‌হেন্দ্র পালা, প্রেমলাল সহ আ‌রো অ‌নেক বি‌দেশী ফুটবলার ঢাকার মা‌ঠে খে‌লেছেন এবং এখ‌নো খেল‌ছেন। এসব বি‌দেশী ফুটবলাররা ঢাকার মা‌ঠে খে‌লে বেশ খ‌্যা‌তি, অ‌ভিজ্ঞতা ও নিপুণতা অর্জন ক‌রে‌ছেন। অবাক হওয়ার বিষয় পরর্বতীকা‌লে তাদের ম‌ধ্যে অ‌নে‌কেই এই দক্ষতার আ‌লো‌কে নিজ দে‌শের হ‌য়ে ‌বি‌ভিন্ন সম‌য়ে বিশ্বকাপ ফুটব‌লে খে‌লে‌ছেন! অথচ যোগ‌্যতা থাকার পরও আমা‌দের দে‌শের ফুটবলাররা বিশ্বকাপ ফুটব‌লে খেলার সু‌যোগ পান‌নি!
ঢাকার এই নত‌ুন ক্লাবগু‌লো ডাচ ফ‌ুটবলার রাইনাস মি‌শেলস ও ই‌য়োহান ক্রুইফ কর্তৃক প্রব‌র্তিত “টোটাল ফুটবল” এর চর্চা শুরু ক‌রে। বর্তমা‌নে ইউ‌রো‌পের বিখ‌্যাত ক্লাব বার্সে‌লোনা, আ‌র্সেনাল, অ‌্যাথ‌লে‌তিক, দি বিলব‌াও, এএফ‌সি আয়াক্স ও স্পে‌নের জাতীয় ফ‌ুটবল দল এই পদ্ধ‌তি অনুসরণ কর‌ছে। ফুটবল মা‌ঠে পাল্টা আক্রমন না ক‌রে ছোট ছোট পা‌সিং এর মাধ‌্যমে নীচ থে‌কে উপ‌রে ওঠার পন্থা‌কেই টোটাল ফুটবল বলা হয়। এই পদ্ধ‌তির ক‌ঠোর অনুসীল‌ন করে অ‌তি অল্প সম‌য়ের ম‌ধ্যেই  ঢাকার নতুন ক্লাবগু‌লি দর্শক‌দের মন জয় কর‌তে সক্ষম হয়। স্বাধীনতা-পূর্ব যু‌গ থে‌কেই মোহা‌মেডান  স্পো‌টিং ছিল ঐ‌তিহ‌্যবাহীদল। তখন তা‌দের প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতা হ‌তো ওয়ান্ডারার্সের সা‌থে। কিন্তু যুদ্ধ পরবর্তী সম‌য়ে ধ্রুপদী লড়াই‌য়ের মাধ‌্যমে ঢাকা ওয়ান্ডারা‌র্সের সেই জায়গা দখল করে নেয় ঢাকা আবাহনী ক্রীড়া চক্র। সূচনা ঘ‌টে মোহা‌মেডান স্পো‌টিং বনাম আবাহনী ক্রীড়া চ‌ক্রের  ম‌ধ্যেকার মহারণ। ৭০, ৮০, ৯০ দশক পর্যন্ত চ‌লে আবাহনী ও মোহা‌মেডা‌নের ম‌ধ্যেকার এই দ্বৈরথ। এই দুইরথীর যুদ্ধ ছিল বর্তমান বা‌র্সে‌লোনা-‌রিয়াল মা‌দ্রিদের ম‌ধ্যেকার লড়াই‌য়ের ম‌তো। এই মহারণ ছিল স‌ত্যিই রোমঞ্চকর। ‌খেলার ধরন, ক্লা‌বের দর্শনেও ছিল স্প‌্যা‌নিশ ফুটবলের কুলীন দুই দ‌লের ছাপ। দর্শক‌দের রোমাঞ্চকর খেলা দেখার সু‌বিধা‌র্থে দুই দ‌লের সূ‌চিও ফেলা হ‌তো লি‌গের এ‌কেবা‌রে শেষ দি‌কে। খেলায় থাক‌তো অ‌ঘো‌ষিত ফাইনা‌লের ঝাঁজ। মোটামু‌টি বলা যে‌তে পা‌রে যখন খেলা হ‌তো, লি‌গের শেষ ম‌্যাচ হ‌তো সেটা।
মোহা‌মেডান ও আবাহনীর দ্বিমুখী দাপ‌টের পাশাপা‌শি ওয়ান্ডার্স, দিলকুশা, বি‌জেএম‌সি, রহমতগঞ্জ, ভি‌ক্টো‌রিয়া,মু‌ক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউ‌নিয়ন দলগুলোর শক্তিমত্তা ছি‌লো চো‌খে পড়ার ম‌তো। ৭০ থে‌কে ৯০ দশ‌কের মাঝামাঝি পর্যন্ত ঢাকা লি‌গের গ‌তি ছি‌লো বিরতীহীন। সে সময় প্রতি বছর লি‌গের আ‌য়োজন মা‌নেই ছি‌লো যে‌নো জমজমাট ফ‌ুটবল উৎসব। আর এই উৎস‌বকে কেন্দ্র ক‌রে শুধু ঢাকা নয়, গোটা দে‌শে ব‌য়ে যে‌তো ফুটব‌লের জোয়াড়। লি‌গের বড় ম‌্যাচগু‌লো দেখার জন‌্য সমর্থকরা আস‌তো ঢাকায়। তারা গ‌্যালা‌রি‌তে সম‌বেত হ‌য়ে নিজ দ‌ল ও খে‌লোয়াড়দের জোগা‌তো উৎসাহ। খেলা দেখার জন‌্য ঢাকায় আগত দর্শকরা টি‌কে‌টের জন‌্য খুব ভো‌রে টি‌কেট কাউন্টা‌রের সাম‌নে লাইন ধ‌রে দাঁ‌ড়ি‌য়ে থাক‌তো। ওই সময় স্টে‌ডিয়া‌মের টি‌কেট পাওয়া ছি‌লো সোনার হ‌রি‌ণের ম‌তো দুর্লভ ব‌্যাপার! আর আবাহনী-‌মোহা‌মেডান কিংবা ব্রাদার্স ইউ‌নিয়‌নের খেলায় তো একথায় স্টে‌ডিয়াম প‌রিগ্রহ কর‌তো জনসমু‌দ্রের রূপ। উ‌ত্তেজনায় ধনু‌কের ছিলার ম‌তো টানটান হ‌য়ে থাক‌তো ফুটবল‌মোদীরা। ঘ‌রে-বাই‌রে, রাস্তা-ঘা‌টে, হাট-বাজা‌রে এক‌টি প্রশ্ন‌কে ঘি‌রে চল‌তো একই আ‌লোচনা, `‌কে জিত‌বে আজ‌কের খেলায়`?
দে‌শের বি‌ভিন্ন  এলাকায় ধারাবিবরনী শোনার জন‌্য রে‌ডিও সে‌টের সাম‌নে ভীড় কর‌তো ফুটবলান‌ুরাগীরা। য‌দি টি‌ভি‌তে খেলা দেখা‌নো হ‌তো তবে টি‌ভি সে‌টের সাম‌নে জ‌ড়ো হ‌তো। আর যে‌দিন আবাহনী-মোহা‌মেডা‌নের লড়াই হ‌তো, সে‌দিন যে‌নো গোটা দে‌শের চেহারাই পা‌ল্টে যে‌তো। অ‌ফিস-আদালত, বাস-‌ট্রেন-লঞ্চ, হোটেল-‌রেস্তোরা সর্বত্র চল‌তো একই আ‌লোচনা। প্রিয় দ‌লের জয়-পরাজ‌য়ের প্রশ্নে ভক্ত-সমর্থকরা মে‌তে উঠ‌তো বিত‌র্কে, স্টে‌ডিয়াম এলকায়  চল‌তো সাজ সাজ রব। পু‌রো স্টে‌ডিয়াম ও এর আশপাশ এলাকায় উড়‌তো আকাশী-নীল ও সাদা-কা‌লো পতাকা। নবাবপুর, গু‌লিস্তান ও পল্টন এলকায় সে‌দিন তিল ধার‌নের জায়গা থাক‌তো না। আর ব‌্যানার-ফেস্ট‌ু‌নে পুরো গ‌্যালা‌রি ভ‌রে যে‌তো। তখন গ‌্যালা‌রি দুই ভা‌গে বিভক্ত ছিল! একভাগ সাদা-কা‌লোর দখ‌লে অন‌্যভাগ আকাশী-নীল‌দের দখ‌লে। ভুলক্রমে এর অন‌্যথা হ‌লে বড়ই বিপ‌দের ব‌্যাপার ছিল! ম‌্যাচ চলা কা‌লে গ‌্যালা‌রি হ‌য়ে ওঠতো উন্মত্ত সমরভূ‌মি‌তে। নিজ দ‌ল প্রতিপ‌ক্ষের নিকট পরাস্ত হ‌লে সমর্থক‌দের দ্বারা পু‌রো স্টে‌ডিয়াম এলাকায় প্রলয় ঘ‌টে যে‌তো। মারামা‌রি-‌দৌড়া‌নি‌তে গোটা এলাকা যুদ্ধ‌ক্ষে‌ত্রে প‌রিনত হ‌তো। এমতাবস্থায় পরা‌জিত দ‌লের প্লেয়াররা সমর্থক‌দের  রোষানল থে‌কে বাঁচার জন‌্য পু‌লি‌শের সহায়তায় কৌশ‌লে মাঠ ছে‌ড়ে পলায়ন কর‌তো! এমন উন্মাদ ছিল ফ‌ুটিবল প্রিয় দশর্করা।
কিস্তু হ‌্যায়! আজ সেই রামও নেই-‌সেই অযোধ‌্যাও নেই। এক সম‌য়ের  বহুল আকা‌ঙ্ক্ষিত ও প্রবল উ‌ত্তেজনাময়  আবাহনী-‌মোহামেডান ফ‌ুটবল ম‌্যা‌চের আ‌বেদন আগের ম‌তো  এখন আর  নেই। আ‌গের ম‌তো নান্দ‌নিক ফুটবলও এখন প্রদর্শীত হয় না। তাই ফুটবল ভক্ত-সমর্থকরা ঘ‌রোয়া ও পেশাদার ফুটবল লিগ থে‌কে অ‌নেক আ‌গে থে‌কেই মুখ ফি‌রি‌য়ে নি‌য়ে‌ছে। গত ক‌য়েক  মৌসু‌মে লিগ ফুটব‌লে আবাহনী-‌মোহা‌মেডা‌নের ম‌্যাচ হ‌য়ে‌ছে নীর‌বে-‌নিভৃ‌তে ও দশর্কশূন‌্য মা‌ঠে। এখ‌নো তা হ‌চ্ছে। য‌দি গুণগত কো‌নো ধর‌নের প‌রিবর্তন না হয়, তা হ‌লে ভ‌বিষ‌্যতেও তাই হ‌বে। সেই দিনগু‌লো‌কে আজ স্বপ্নই ম‌নে হয়। সেই সময় আবাহনী-মোহা‌মেডান এর ফুটবল ম‌্যাচ বল‌লেই পু‌রো দেশ দু`ভা‌গে ভাগ হ‌য়ে যে‌তো। মা‌ঠে ও মা‌ঠের বাই‌রে চলত সমান লড়াই। এমন‌কি এই দুই দ‌লের খেলা‌কে কেন্দ্র ক‌রে দে‌শে একা‌ধিকবার খু‌নোখু‌নি পর্যন্ত হ‌য়ে‌ছে! এমন পাগলা‌টে ফুটবল ভক্ত ও সমর্থক ছি‌লো আমা‌দের‌দে‌শে।
৭০, ৮০, ৯০ দশ‌কের পরও বর্তমান শতাব্দীর শুরুর দি‌কে ঢাকার ক্লাব ক্রীড়াঙ্গ‌নে প্রায় সমান প্রাধান‌্য ও দাপট ছিল আবাহনী-‌মোহা‌মেডা‌নের। শি‌রোপা লড়াই কেন্দ্রীভূত থাক‌তো সাদা-কা‌লো আর নীল-আকাশী শি‌বি‌রের ম‌ধ্যে। সর্বা‌ধিক জনসমর্থনপুষ্ট আবাহনী আর মোহা‌মেডা‌নের নির্ধারীত ম‌্যাচগু‌লো এক পর্যা‌য়ে প‌রিনত হ‌তো  ঐ‌তিহ‌্য ও মর্যাদার লড়াই‌য়ে। উ‌ল্লেখ‌্য, ১৯৭৩ সাল থে‌কে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অনু‌ষ্ঠিত মোট ১৭ টি লী‌গের ম‌ধ্যে মোহা‌মেডান ৭ বার, আবাহনী ৮ বার, বিআই‌ডি‌সি ১ বার এবং বি‌জেএম‌সি ১ বার ক‌রে  শি‌রোপা জয় ক‌রে‌ছে। এর ম‌ধ্যে আবাহন‌ী একবার (`৮৩, `৮৪, `৮৫) এবং মোহা‌মেডান একবার (`৮৬, `৮৭,`৮৮) হ‌্যা‌ট্রিক শি‌রোপার স্বাদ পে‌য়ে‌ছে। অবাক হওয়া বিষয়, উক্ত সম‌য়ে প্রতি‌টি আস‌রে শক্তিমত্তার প‌রিচয় দি‌য়ে লড়াই ক‌রেও একবারও লীগ শি‌রোপার স্বাদ পায়‌নি ব্রাদার্স ইউ‌নিয়ন। ত‌বে দুই যু‌গের বে‌শি সময় অ‌পেক্ষার অব‌শে‌ষে তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হ‌য়ে‌ছে ২০০৩ সা‌লে।
বস্তুত ৭০ থে‌কে ৯০ দশক পর্যন্ত  আবাহনী-‌মোহা‌মেডানের ফুটবল মানেই ছি‌লো যে‌নো জ্ব‌লে ওঠা বারুদ। তখন ছোট দলগু‌লোও ছি‌লো সেয়া‌নের ম‌তো। বড়দলগু‌লো‌কে কখ‌নো তারা ছাড় দি‌তো না, পরাভব মন‌তো না। এখনকার ম‌তো তখন ছিলো না পাতা‌নো খেলার গন্ধ। প্রতি‌টি খে‌লোয়াড় ছি‌লো ত‌্যাগ‌ী ও নিষ্ঠাবান। তা‌দের মানও ছি‌লো অ‌নেক উন্নত।
সুতরাং ফুটব‌লের এ‌গি‌য়ে সাম‌নের দি‌কে নি‌য়ে যেতে হ‌লে এই দুই দ‌লের দ্বৈরথ‌কে আবারও ফি‌রি‌য়ে আনা অত‌্যান্ত জরু‌রি। তা বাস্তবায়‌নের জন‌্য ঢাকার সহ দে‌শের অন‌্যান‌্য অঞ্চ‌লের প্রতি‌টি ক্লাব‌ থে‌কে রাজনী‌তি ও দলাদলী বন্ধ কর‌তে হ‌বে। ফুটবল‌কে আ‌রো গ‌তিশীল করার জন‌্য পৃষ্ঠ‌পোষকতা বাড়া‌তে হ‌বে এবং উন্নত প্রশিক্ষ‌নের ব‌্যবস্থা কর‌তে হ‌বে।(চল‌বে)
খায়রুল আকরাম খান
ব‌্যু‌রো চীফ : দেশ দর্শন

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

হিজবুল্লাহকে ইসরাইলের কঠিন হুশিয়ারি

‌ফি‌লি‌স্তি‌নের রক্তঝরা ইতিহাস

বিপদে ভেঙ্গে পড়া নয়, কৃতজ্ঞতাবোধ…

মান‌সিক অস্থিরতা দূর করতে কোন…

প‌রিবার ও সম্প্রী‌তির বন্ধন

অর্থই কি সব সু‌খের মূল?