example.com

Verify you are human by completing the action below.

example.com needs to review the security of your connection before proceeding.
শবে বরাত: হারানো উৎসব – দেশ দর্শন
বুধবার রাত ২:১৯, ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
হাফেজ আবুল হাসান কুমিল্লার হুজুরের জানাযায় জনতার ঢল ‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

শবে বরাত: হারানো উৎসব

৮৯৯ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ইসলামের ছোট বড় শাখা প্রশাখা নিয়ে মতবিরোধ, আলোচনা, সমালোচনা, পর্যালোচনা, এমনকি খুনোখুনি আমাদের দেশের একটা স্বাভাবিক এবং চলমান ঘটনা। এ নিয়ে বেশি চিন্তা গবেষণার চেয়ে মৌলিক বিষয়গুলোকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করা, ইসলাম বিরোধিতার বাঁধ ভাঙা জোয়ারে ভেসে যাওয়া থেকে নিজেকে এবং আপনজনকে রক্ষা করা বেশি জরুরি মনে করি।

ফেকাহ মাসয়ালায় বিস্তর পড়ালেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। যা জানি নিজে আমল করি। জায়েয নাজায়েয বলার অধিকার আমার নেই। ব্যক্তিগত দেখা এবং অনুভূতি থেকে সময়ের অন্যতম মতবিরোধের বিষয় শবে বরাত নিয়ে আজকের আলাপ করছি।

আব্বা এলাকার মসজিদের ইমাম ছিলেন দীর্ঘ সময়। ছোটবেলা থেকেই শবে বরাত কাটতো আব্বার মসজিদে। মাগরিবের কিছুক্ষণ পর সবাইকে মসজিদে আসতে বলে দোয়া দরুদ পড়ে আব্বা আলোচনা শুরু করতেন। নামাজ, রোজা, শবে বরাতের গুরুত্ব, শবে বরাতের আমল সম্পর্কে আলোচনা করতেন এক দেড় ঘন্টা। ধীরে ধীরে ছোট-বড়, যুবক-বৃদ্ধে মসজিদ ভরে যেতো। এলাকার অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে যারা জুমার নামাজ ছাড়া মসজিদে আসে না তারাও চলে আসতো আগে আগে। পাঞ্জাবী, টুপি পরে ভাবগাম্ভীর্যের সাথে। আলোচনার পর এশার নামাজ হতো। তারপর বাতি বন্ধ করে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে জিকির। জিকিরের পর মিলাদ, মুনাজাত। মুনাজাতের কান্নার আওয়াজ এখনো প্রতিধ্বনি হয়ে কানে বাজে। এরপর হতো জিলাপি বিতরণ।

‌জিলাপী নিয়ে বাড়িতে চলে আসতাম। কিছু খেয়ে শরীর ভালো থাকলে আবার মসজিদে। মসজিদে তখন নামাজ, তাসবিহ পাঠ, কোরআন তেলাওয়াত চলতো। ব্যক্তিগতভাবে। বাড়িতে মহিলারা নামাজ, তেলাওয়াতে ব্যস্ত থাকতেন।

ভোররাতে উঠে তাহাজ্জুদ, সাহরি খেয়ে ফজর পড়ে ঘুমাতে যেতাম।

বাড়িতে থাকার সময়টায় শবে বরাত এভাবে কাটতো। একটা উৎসবের আমেজ বিরাজ করতো পুরো এলাকায়। যারা নিয়মিত নামাজ রোজা করতো তাদের জন্য শবে বরাত ছিল রমজানের অতিরিক্ত আমলের প্রস্তুতি। আর যারা নিয়মিত নামাজ রোজা করতো না তারা শবে বরাতকে উপলক্ষ করে নিজেকে দ্বীনের লাইনে আনার চেষ্টা করতো। শবে বরাত থেকে হিসেব শুরু হতো। রমজানের আর এতো দিন বাকি।

এরপর অনার্স পড়তে দূরের মাদরায় চলে যাই। দীর্ঘ ছয় সাত বছর সেখানেই শবে বরাত কাটানো হয়। সেখানের পরিবেশ ছিল অনেকটা  এলাকার মতোই। বাড়তি ছিল জিলাপির বদলে বিরানি আর মিলাদের সাথে কেয়াম।

তবে একটা ব্যাপার লক্ষণীয় ছিল, শবে বরাত ছিল স্বাভাবিক এবং উৎসবমুখর একটা রাত। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শবে বরাত পালনের পক্ষে থাকলেও এনিয়ে ছাত্রদের উপর চাপাচাপি করতো না। ছাত্ররা নিজ নিজ পছন্দ মাফিক আশপাশের বিভিন্ন মসজিদে চলে যেতো। রুমে থাকলে ও কোনো সমস্যা ছিল না। যাদের ইচ্ছা রোজা রাখতো। বাবুর্চি সমন্বয় করে রান্না করতো।

বাড়িতে ফিরে এসেছি কয়েক বছর হলো। শবে বরাত কাটানো হয় বাড়িতেই। মসজিদে আগের মতো আলোচনা, জিকির, মিলাদ হয় না। সাধারণ কিছু মানুষ আগের অভ্যাসে পাঞ্জাবী টুপি পরে বের হয়। মসজিদ শূন্য দেখে দোকানে আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফেরে। নিয়মিত মুসুল্লিরা কিছু আমল করেন নিজে নিজে। কেউ আক্ষএপ করেন পুরোনো দিন হারিয়ে। কেউ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ‘সঠিক’ মাসয়ালা জানতে পেরে।

শবে বরাত উদযাপনের ভালো-মন্দ, জায়েয-নাজায়েয আলেম, মুফতিগণ বলবেন। আমি শুধু এটুকু বলবো, আমরা একটি উৎসব হারিয়েছি। পথে পথে টুপি পাঞ্জাবির সমাগম, ভালো রান্নার আয়োজন, ওয়াজের অপার্থিব সম্মোহন, জিকিরের হৃদয় কাঁপানো ঝঙ্কার, গ্রামের আলাভোলা সহজ সরল মানুষের কান্নার সাথে নিজের চোখে পানি আনার চেষ্টা, জিলাপির মিষ্টির স্বাদ হারিয়েছি। এই উৎসব কি ফিরে আসবে কখনো আমাদের জীবনে? আবার কি হবে দেখা, মিলাদ-তবরকের আয়োজন; মসজিদ ভর্তি ছেলে বুড়োর সমাগম, বুড়োদের নিমগ্ন এবাদত, এক টুকরো জিলাপির আশায় মসজিদের বারান্দায় শিশু কিশোরদের হৈ হুল্লোড়! যদি আসে কখনো সেদিন। মসজিদের মাইকে বাজাাবো আমার প্রিয় গজল, এলো খুশির বারাত নিয়ে শবে বরাত… মসজিদে মসজিদে খুশির এলান…

০৩.০৩.২৩

রাজিবপুর, সদর, লক্ষ্মীপুর

 

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

পিআর পদ্ধ‌তির সু‌বিধা-অসু‌বিধা

শর‌তের কাশফুল

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি (৩য়…

সমস্যার ঘুরপা‌কে গোটা জা‌তি

৪০ বছর পর শৈশ‌বের বন্ধু‌দের…