বুধবার দুপুর ১২:০৩, ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ. ২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বশেষ খবর:
‘আমার স্ত্রী মাকসুদাকে মেরে ফেলেছি, আমাকে থানায় নিয়ে যান’ বন্যার্তদের জন্য জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভা ও দোয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়কর আইনজীবী সমিতির অভিষেক ও দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠিত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা একাডেমিতে ‘মাতৃভাষা উৎসব’ ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বোর্ড নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনী পোস্টারে লেমিনেশন ও পলিথিন ব্যবহাররোধে স্মারকলিপি ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর জাতীয় পার্টি: চুন্নু মাতৃভাষা একাডেমিতে কবিতা আড্ডা অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া সম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার বিখ্যাত বাইশমৌজা বাজার ও গরুর হাট ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ায় তরুণ আলেমদের ২য় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তরুণ আলেমদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ভার‌তের আধিপত্যবাদ ও বাংলা‌দেশ-৪র্থ পর্ব

৪২ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

মু‌জিবনগর সরকা‌রের সা‌থে ভার‌তের  সম্পা‌দিত  গোপন চু‌ক্তি অনুযায়ী, বাংলা‌দেশ সেনাবা‌হিনীর বিকল্প হি‌সে‌বে ১৯৭২ সা‌লের শুরু‌তেই মু‌জিব বা‌হিনী ও কা‌দেরীয়া বা‌হিনীর সদস‌্যদের নিয়ে “জাতীয় রক্ষীবাাহনী” না‌মে এক‌টি আধা-সাম‌রিক বা‌হিনী গঠন করা হয়।  মু‌জিবনগর সরকা‌রের রাষ্ট্রপ‌তি শেখ মু‌জিবুর রহমান ১৯৭২ সা‌লের ১০ জানুয়া‌রি দে‌শে প্রত‌্যাবর্ত‌নের পর ২৪ জানুয়া‌রি এই ব‌্যাপা‌রে  ব‌াংলা‌দেশ অস্থায়ী  সরকার এক‌টি আদেশ জা‌রি ক‌রে। গোড়ার দি‌কে রক্ষীবা‌হিনী মানু‌ষের সমর্থন ও মন জয় করার জন‌্য বেশ কিছু কার্যকর পদ‌ক্ষেপ নিয়ে অ‌নেক অ‌বৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার এবং চোরাচালান, রাহজানী, ডাকা‌তি  ও কা‌লোবাজারী‌দের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন পরই এই বা‌হিনীর আসল চেহারা সাধারণ মানু‌ষের নিকট উন্মো‌চিত হ‌তে থা‌কে।

 রক্ষীবা‌হিনীর সদস‌্যরা রা‌ষ্ট্রের কল‌্যাণকর ও নিরাপত্তাজনিত দা‌য়িত্ব পালন না ক‌রে রাজ‌নৈ‌তিক হত‌্যাকান্ড, গুম, ধর্ষণ, চাঁদাবাজী, দখলবাজী ইত‌্যা‌দি কা‌জে  জ‌ড়ি‌ত হ‌য়ে প‌ড়ে।  ঝ‌টিকা বা‌হিনীর ম‌তো রক্ষীবা‌হিনী প্রায়ই একেক‌টি পাড়া-মহল্লা ও গ্রা‌মে ঝা‌পি‌য়ে পড়ত এবং অস্ত্র ও দুস্কৃতিকারী‌দের খোঁজার ছ‌ুতায় মূলত তারা খুঁজ‌তো মুজিববাদ ও ভারতীয় আধিপত‌্যবাদ বি‌রোধী রাজ‌নৈ‌তিক নেতা-কর্মী‌কে। তা‌দের য‌থেচ্ছাচার নিয়ন্ত্রণ বা কার্যকলা‌পের জবাব‌দিহিতার আইনগত কো‌ন ব‌্যবস্থা ছিল না।
অপরাধ স্বীকার করা‌নোর জন‌্য গ্রেফতারকৃত লোকদের প্রতি অত‌্যাচার, লুটপাট, ভয়ভী‌তি দে‌খি‌য়ে টাকা আদা‌য়ের অগ‌ণিত অ‌ভি‌যোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনাল‌য়ে দ‌খিল করা হ‌লেও সরকার রক্ষীবা‌হিনীর বিরু‌দ্ধে যথাযথ ব‌্যবস্থা না নিয়ে বরং, ১৯৭৪ সা‌লের ৭ ফেব্রুয়া‌রি ‘জাতীয় রক্ষীবা‌হিনী অধ‌্যা‌দেশ ১৯৭২’ এ এক‌টি সং‌শোধন জা‌রির মাধ‌্যমে রক্ষীবাহিনী‌কে বিনা ওয়া‌রে‌ন্টে যে‌কো‌নো স‌ন্দেহভাজন ব‌্যক্তি‌কে গ্রেফতার করার এখতিয়ার দেওয়া হয় এবং রক্ষীবা‌হিনীর সকল কার্যকলা‌প আইনসঙ্গত ব‌লে ঘোষণা করা হয়।
  এই ঘোষণার পর পরই রক্ষীবা‌হিনীর নৃশয়সতা ও নির্মমতা ব‌্যাপাকভা‌বে বৃদ্ধি পায়। তারা বে‌ছে বেছে মু‌ক্তি‌যোদ্ধা, লেখক, সাংবা‌দিক, রাজ‌নৈ‌তিক নেতাকর্মী‌কে  রাজাকার বা ভারত‌বি‌রোধী  অ‌ভিহিত ক‌রে নির্মমভা‌বে হত‌্যা শুরু ক‌রে। ১৯৭১ সা‌লের ফেব্রুয়া‌রি থে‌কে ১৯৭৫ সা‌লের আগ‌স্টের প্রথমা‌র্ধে  পর্যন্ত  তারা সারা দে‌শে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ‌কে নিষ্ঠুরভা‌বে হত‌্যা ক‌রে‌ছিল। এই বা‌হিনী‌কে হিটলা‌রের গেস্টা‌পো বা‌হিনীর সা‌থে তুলনা করা যে‌তে পা‌রে।
ব‌র্ণিত আছে, রক্ষীবা‌হিনী গঠন নিয়ে তৎকালীন সেনাবা‌হিনীর ম‌ধ্যে চরম অস‌ন্তোষ সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছিল। রক্ষীবা‌হিনী‌কে অ‌নেক ক্ষে‌ত্রে সেনাবা‌হিনীর চে‌য়ে বে‌শি ক্ষমতা দেওয়া হ‌য়ে‌ছিল। সরকার সেনাবা‌হিনীর তুলনায় তা‌দের‌কে অ‌তি‌রিক্ত সু‌যোগ-সু‌বিধা  ও আধু‌নিক সরঞ্জামা‌তি প্রদান কর‌তো। এমন‌কি সব সময় রক্ষীবা‌হিনী‌কে সেনাবা‌হিনীর সমান্তরালা এক‌টি বা‌হিনী‌ হি‌সে‌বে দেখা হ‌তো। সরকা‌রের এধর‌নের বিমাতা সুলভ আচরণ
 সেনাবা‌হিরীর সদস‌্যদের মা‌ঝে  নিরাপত্তাহীনতা ও স‌ন্দেহের সৃ‌ষ্টি ক‌রে। এছাড়াও তা‌দের  বিরু‌দ্ধে নানারকম অ‌ভি‌যোগ, যেমন-মানবা‌ধিকার লংঘন, বিচার ব‌হির্ভূত হত‌্যাকান্ড, লুটতরাজ ইত‌্যা‌দি সেনাবা‌হিনীর ম‌ধ্যে চরম ক্ষো‌ভের সৃ‌ষ্টি ক‌রে।
 পরবর্তী‌তে  এই অস‌ন্তোষ ও অ‌বিশ্বাস এক‌টি বড় রাজ‌নৈ‌তিক ঈস‌্যু‌তে প‌রিণত হয়।
কথিত আছে, Raw-এর তৎকালীন কমান্ডার মেজর জেনা‌রেল সুজন সিং উবা‌নের প্রশিক্ষ‌নে জাতীয় রক্ষীবা‌হিনী গ‌ঠিত হ‌য়ে‌ছিল। রক্ষীবা‌হিনীর পোশাক ছিল জলপাই  র‌ঙের, যা ছিল ভারতীয় বা‌হিনীর পোশা‌কের রঙ।  বিষয়‌টি খুবই রহস‌্যজনত ব‌টে!!
১৯৭৫ সা‌লের ১৫ আগ‌স্টের রা‌জনৈ‌তিক পট প‌রিবর্ত‌নের পর পরই এই বা‌হিনী অবলুপ্ত করা হয়। অবলুপ্ত হওয়ার পর রক্ষীবাহিনীর অ‌নেক সদস‌্য সেনাবা‌হিনী ও পু‌লিশ বা‌হিনী‌তে আত্মীকৃত হন।
জাতীয় রক্ষীবা‌হিনীর  নিমর্মতা ও বর্বরতার কথা বাংলা‌দে‌শের মানুষ কখ‌নো ভ‌ুল‌বে না। এই বা‌হিনী দে‌শের সর্বত্র এক‌টি ত্রা‌সের রাজত্ব কা‌য়েম ক‌রে‌ছিল।
বস্তুত, ভার‌তের আজ্ঞাবাহী  তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার‌ নি‌জে‌দের  সুরক্ষা ও  একক কর্তৃত্ব  প্রতিষ্ঠার জন‌্যই সে‌দিন সদ‌্য স্বাধীন বাংলা‌দে‌শে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গো‌য়েন্দা সংস্থার পরাম‌র্শ ও প‌রিকল্পনায়  সেনাবা‌হিনীর বিকল্প হি‌সে‌বে জাতীয় রক্ষীবা‌হিনী গঠন ক‌রেছিল। (চল‌বে)।
খায়রুল আকরাম খান
ব‌্যু‌রো চীফ : deshdorshon.com

Some text

ক্যাটাগরি: Uncategorized

Leave a Reply

slottica-polska-test

ভার‌তের আধিপত্যবাদ ও বাংলা‌দেশ

আগে সংস্কার প‌রে নির্বাচন

বিএনপি কি জিয়াউর রহমানের পলিসী…